Monday, August 19, 2013

English to Bangla Dictionary ডাউনলোড করুন


আপনার জাভা মোবাইল থেকে ওয়ালি বাংলা ডিকশনারী ডাউনলোড করে নিন

Thursday, July 18, 2013

জিহাদের মনোভাব প্রজ্জলিত হতেই থাকবে

                                 জিহাদের মনোভাব প্রজ্জলিত হতেই থাকবে
যিলহজ্জ ২১, ১৪৩৩ হিজরি, মঙ্গলবার, নভেম্বর ০৬, ২০১২


আল-হামদুলিল্লাহ, সকল প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু তা’য়ালার, যিনি বিশ্বের প্রভূ। দোয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তার পরিবারবর্গ এবং সাহাবাগনের উপর।
ইসলামের শত্রুরা মুসলিমদের ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। সব ধরনের সম্পদ ও প্রচেষ্টাকে কাজে লাগানো হচ্ছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য। কোন একটা মুহুর্তের জন্যেও তারা বিরত হচ্ছে না। আল্লাহ তা’য়ালা কুরআনে একথা জানিয়ে দিয়েছেন, “এবং যদি তারা সক্ষম হয় তবে তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেই থাকবে যতক্ষন না তোমরা দ্বীনের পথ থেকে সরে যাও।” (আল-বাকারাঃ২১৭)

আল্লাহ তা’আলা তাঁর আয়াত এ বলেন...
وَلَايَزَالُونَيُقَاتِلُونَكُمْحَتَّىيَرُدُّوكُمْعَنْدِينِكُمْإِنِاسْتَطَاعُوا
ইবনে কাসির (রহঃ) পুর্ববর্তী আয়াতের ব্যাখ্যা করেন যে, “এবং ফিতনাহ হত্যার চেয়েও জঘন্য পাপ” অর্থাৎ “বস্তুত তারা একজন মুসলিমকে তার দ্বীনের মধ্যে ফিতনায় ফেলছে এবং এভাবে ঈমান আনার পরও তাকে কুফরের দিকে ঝুঁকিয়ে মুরতাদ বানাচ্ছে এবং এটা আল্লাহর নিকট হত্যার চেয়েও মারাত্মক।” এবং এরপর তিনি বর্ননা করেন “এবং যদি তারা সক্ষম হয় তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেই থাকবে যতক্ষন না তোমরা দ্বীনের পথ থেকে সরে যাও।” মানে হল “এবং তারপর তারা আরো খারাপ ও আরো জঘন্য পাপ করবে, তারা অনুতপ্তও হবে না বা বিরতও হবে না।”
শায়খ আব্দুর রহমান বিন নাসির আল-সা’দি উপরের আয়াতটির তাফসীরে বলেন “এবং আল্লাহ তা’য়ালা জানান যে, তারা অনবরত মুমিনদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকবেমুমিনদের বৈশিষ্ট্য মুছে দেওয়া এবং হত্যা করা তাদের লক্ষ্য নয়। বস্তুত, তাদের লক্ষ্য হল মুমিনদেরকে তাদের দ্বীন থেকে সরিয়ে দেওয়া এবং তারপর তারা কাফির হয়ে যায় যদিও তারা পূর্বে বিশ্বাসী ছিল এবং প্রজ্বলিত জাহান্নামের বাসিন্দা হয়। এই সবের জন্য তারা তাদের সামর্থ্যকে প্রয়োগ করে এবং যা করতে পারে সবই করে।” এবং তারা তাদের মুখের সাহায্যে আল্লাহর (দ্বীনের) মশাল নিভিয়ে ফেলতে চায়।, কিন্তু আল্লাহ তার এ আলোর পূর্ণ বিকাশ ছাড়া অন্য কিছুই চান না, যদিও কাফেররা তা পছন্দ করে না।””
তিনি আরো বলেন “ এই বৈশিষ্ট্য সকল কুফফরের জন্য প্রযোজ্য, তারা তাদের নিজেদের বাইরের দলগুলোর সাথে কখনোই যুদ্ধ হতে বিরত হবে না যতক্ষন না তাদেরকে দ্বীন থেকে সরিয়ে দেয়া যায়। বিশেষ করে ইহুদী ও খ্রিস্টানদের মধ্য হতে আহলে কিতাবধারীরা যারা তাদের দ্বীনের দিকে উম্মাহকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সংস্থা স্থাপন করেছে, মিশনারি ছড়িয়ে দিয়েছে, ডাক্তার নিযুক্ত করেছে, স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে এবং তাদের দ্বীনের (ইসলামের) মধ্যে সন্দেহ ঢুকানোর জন্য বিভিন্ন প্রোপ্যাগান্ডা তৈরি করছে।”
যদি এই হয় অবস্থা, তাহলে কি হবে যদি জিহাদের মনোভাব স্তিমিত হয়ে যায় যখন কাফিরদের শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব তীব্র হচ্ছে?
আল্লাহ কুফফারদের অন্য একটি ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানান, তারা অব্যাহত ভাবে আল্লাহর পথ হতে ব্যাহত করার কাজ করে এবং আন্দোলন তৈরি করে যা ইসলাম হতে দূরে সরিয়ে দেয়। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,
قُلْيَاأَهْلَالْكِتَابِلِمَتَصُدُّونَعَنْسَبِيلِاللَّهِمَنْآمَنَتَبْغُونَهَاعِوَجًاوَأَنْتُمْشُهَدَاءُوَمَااللَّهُبِغَافِلٍعَمَّاتَعْمَلُونَ
“তুমি বল, হে আহলে কিতাবরা, যারা ঈমান এনেছে তোমরা কেন তাদের আল্লাহর পথ থেকে সরাতে চেষ্টা করছ, তোমরা (আল্লাহর) পথকে বাঁকা করতে চাও, অথচ তোমরাই তো (সত্যের) সাক্ষী?” এবং তোমরা যা কর সে ব্যাপারে আল্লাহ উদাসীন নয়। হে মুমিনরা, যাদের (আগে) কিতাব দেওয়া হয়েছে তোমরা যদি তাদের কোন একটি দলের কথা মেনে চল, তাহলে ঈমান আনার পরও তারা (ধীরে ধীরে) তোমাদের কাফির বানিয়ে দেবে”(আলি-ইমরানঃ ৯৯-১০০)
এই কারনে, (তেজী) মনোবলকে ম্রিয়মাণ হতে দেওয়া যাবে না, এটা অবশ্যই জাগিয়ে রাখতে হবে। যদি শরি’য়ার শর্ত অনুযায়ী প্রত্যক্ষ জিহাদের উপযুক্ত সময় না হয় অথবা সামর্থ্য না থাকে তাহলেও আমাদের অবশ্যই জিহাদের মনোবলকে চাঙ্গা রাখতে হবে।
আল্লাহর দ্বীনকে ধ্বংস করার জন্য ইসলামের শত্রুরা বিভিন্ন ধরনের পন্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তাঁর (দ্বীনের) মশাল উপড়ে ফেলার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রতারনা করছে। একটা হল তাদের মুখ দ্বারা যেমনটি কুরআনে বর্নিত হয়েছে, উদাহরণস্বরূপ মিডিয়ার ফানেলের মাধ্যমে। সুতরাং আমাদের এই ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে যে, ইসলামের শত্রুরা ইসলামকে আক্রমণ করার জন্য সাংবাদিক কার্যক্রম সহ আরো বিভিন্নভাবে মিডিয়াকে ব্যবহার করবে, তাই আনসারুল্লাহ এবং মুজাহিদিনদের দক্ষ হতে হবে যাতে কুফফরদের ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হওয়া যায় এবং তা প্রতিহত করা যায়।
আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,
يُرِيدُونَأَنْيُطْفِئُوانُورَاللَّهِبِأَفْوَاهِهِمْوَيَأْبَىاللَّهُإِلَّاأَنْيُتِمَّنُورَهُوَلَوْكَرِهَالْكَافِرُونَ
“তারা তাদের মুখের (এক) ফুঁৎকারে আল্লাহর (দ্বীনের) মশাল নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তার এ আলোর পূর্ণ বিকাশ ছাড়া অন্য কিছুই চান না, যদিও কাফেররা তা পছন্দ করে না।” (আত-তাওবাঃ৩২)
অন্য একটি আয়াতও তা ফুটিয়ে তোলে,
لَتُبْلَوُنَّفِيأَمْوَالِكُمْوَأَنْفُسِكُمْوَلَتَسْمَعُنَّمِنَالَّذِينَأُوتُواالْكِتَابَمِنْقَبْلِكُمْوَمِنَالَّذِينَأَشْرَكُواأَذًىكَثِيرًاوَإِنْتَصْبِرُواوَتَتَّقُوافَإِنَّذَلِكَمِنْعَزْمِالْأُمُورِ
“(হে মুমিনেরা) নিশ্চয়ই মাল ও জানের মাধ্যমে তোমাদের পরিক্ষা নেয়া হবে। এবং তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায় – যাদের কাছে আল্লাহর কিতাব নাযিল হয়েছিল এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্যদের শরীক করেছে, তাদের (উভয়ের) কাছ থেকে অনেক (কষ্টদায়ক) কথবার্তা শুনবে, এ অবস্থায় তোমরা যদি ধৈর্য ধারন কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, তাহলে তা হবে অত্যন্ত বড়ো সাহসিকতার ব্যাপার।” (আলি-ইমরানঃ১৮৬)
যদি আমরা দেখি, বর্তমানে অধিকাংশ মিডিয়াই কুফফরদের দ্বারা এবং মুনাফিকদের মধ্য হতে কুফফরদের সমর্থকদের দ্বারা পরিচালিত। সুতরাং এটাই স্বাভাবিক যদি আমরা অধিকাংশ গন মিডিয়ায় দেখি যে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে ঘৃনা প্রচার করছে, ইসলামের শিক্ষাকে অপমান করছে, মুসলিমদের একঘরে করে ফেলছে, জিহাদকে সন্ত্রাস বলে প্রচার করছে, জিহাদের কার্যক্রমকে নেতিবাচক শিরোনাম দিয়ে প্রচার করছে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে এরকম অনেক কিছু করছে। এমনকি কি এর চেয়েও দুঃখজনক হল, মুসলিম সম্প্রদায় এগুলো গিলছে এবং পাল বেধে ইসলাম সম্পর্কে একটা পক্ষপাতদুষ্ট উপসংহারের দিকে আগাচ্ছে এবং তারা এটা কোন রকমের বাছ বিচার ছাড়াই গ্রহণ করছে। সুতরাং বস্তুত, এই যুগে সংগ্রামের জন্য খুব বেশী প্রয়োজন অধিক পরিমান ধৈর্য এবং আল্লহভীতি (তাকওয়া), “কিন্তু যদি তুমি ধৈর্য ধারন কর এবং আল্লাহকে ভয় কর- তাহলে, তা হবে অত্যন্ত বড়ো ধরনের এক সাহসিকতার ব্যাপার
গন মিডিয়ার মাধ্যমে কুফফরদের ঘৃনার কথাও আল্লাহ সুবহানু তা’য়ালা তার আয়াতের মাধ্যমে জানিয়েছেনঃ
“হে মুমিনেরা, তোমরা নিজেদের (মুমিনদের) ছাড়া অন্য কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ কর না, কারন তারা তোমার অনিষ্ট সাধনের কোন পথই অনুসরন করতে দ্বিধা বোধ করবে না, তারা তো তোমাদের ক্ষতি-ই কামনা করে, তাদের ঘৃনা তাদের মুখ থেকেই প্রকাশ পেতে শুরু করেছে, এবং তাদের অন্তরে লুকানো হিংসা বাইরের অবস্থার চাইতেও মারাত্মক”। (আলি-ইমরানঃ ১১৮)
এটা হতে পারে যে , যদি আমরা সমর্থ হই, আমরা অবশ্যই বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করব এবং তাদের ধ্বংস করব। কিন্তু কি করব, যখন উম্মাহ দুর্বল অবস্থায় আছে? গন মিডিয়ায় মুজাহিদিনদের সামর্থ্য কম। একজনকে ধৈর্য্য ক্রমাগত বৃদ্ধি করতে হবে, এর মধ্যে একটি হল মিডিয়ার মাধ্যমে জিহাদ পরিচালনা করার আকাঙ্ক্ষাকে জাগ্রত রাখা
কিভাবে জিহাদের মনোবলকে চাঙ্গা রাখা যায় তার জন্য কিছু উপদেশঃ
দুনিয়া ও আখিরাতের ব্যাপারে মনের পরিবর্তন করুন; আখিরাতকে প্রধান জীবন বানান। দুনিয়া কেবল তার সঙ্গী হচ্ছে, এটাকে লক্ষ্য বানানো উচিত নয়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসল্লাম আহযাবের যুদ্ধে যখন খন্দক খুঁড়ছিলেন তখন তার সাহাবাদের সম্পর্কে বলেন,
اللهمإنالعيشعيشالآخره . فاغفرللأنصاروالمهاجره
“হে আল্লাহ, বস্তুত জীবন হচ্ছে আখিরাতের জীবন। সুতরাং আনসার ও মুহাজিরীনদেরকে তুমি ক্ষমা কর। (আল-বুখারী) মানে হচ্ছেঃ হে আল্লাহ, বস্তুত জীবন হচ্ছে তাই যা আমরা খুজছি এবং যা হয় চিরস্থায়ী আর তা হল আখিরাতের জীবন।”
কেন আমরা আমাদের এই মনকে অবশ্যই কোন দ্বিধা-দন্ড ছাড়াই আখিরাতমুখী করব? কারন পার্থিব পরিবেশ জিহাদের মনোভাবকে দুর্বল করে দিতে পারে। আমাদের মনে রাখা দরকার, যদি আমরা পার্থিব জীবনে সুখ অথবা দুঃখ পাই, তা মাত্র ৬০-৭০ বছরের মত হবে, এতে অল্প কিছুই ভোগ করব। যাহোক, যদি আমরা আখিরাতের জীবনের মোটামুটি একটা হিসাব করি, তাহলেও ক্ষতির পরিমান অপরিমেয়, আখিরাতের একদিন দুনিয়ার পঞ্চাশ হাজার বৎসরের মত। আল্লাহ তা’য়ালাই ভাল জানেন।



মূল প্রবন্ধ ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় লিখাঃ বদরুল তামাম


voa-islam.com

একজন মুজাহিদ কর্তৃক অনুদিত এবং পরিবেশিত।

Wednesday, July 10, 2013

আল্লাহুআকবার!

আল্লাহুআকবার!
আল্লাহুআকবার!
আল্লাহুআকবার!
আল্লাহুআকবার!

এরকম হাসি মাখা মুখে শাহাদাৎ বরণকারী তিনজন ভাইয়ের চেহারা দেখলাম…

কোনো মুমিন যখন শহীদ হতে থাকে তখন সে শহীদ হওয়ার পরে যে জান্নাতে থাকবে সেই জান্নাত তাকে দেখানো হয়…
আর সেই আনন্দেই হয়ত আমাদের এই ভাইয়েরা হাসতে হাসতে তাদের সেই কাঙ্খিত বাসস্থান জান্নাতে চলে গেছেন।

হে আল্লাহ! তুমি তাদেরকে শহীদের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করো - আমীন।

Tuesday, July 9, 2013

picture


কবিতা

ফররুখ আহমদ রহঃ

এ নির্লজ্জ মানবতাহীন পশুদের যেথা ভীড়
দ্বীনের রোশনী মুছে যারা টানে শামিয়ানা রাত্রির;
সেথা উমরের দোররা হানিয়া আনো পথ মুক্তির
আনো আজাদীর শুভ্রতা, ভাঙ্গো শঙ্কা ধরিত্রীর।
মহান নবীর খলিফা সে বীর; তার আরদ্ধ দিন
আমাদের হাতে হোক আজ ফিরে সুন্দর রঙ্গীন।

আজকে উমর-পন্থী পথীর দিকে দিকে প্রয়োজন
পিঠে বোঝা নিয়ে পাড়ি দেবে যারা প্রান্তর প্রাণ-পণ,
উষর রাতের অনাবাদী মাঠে ফলাবে ফসল যারা
দিক-দিগন্তে তাদেরে খুঁজিয়া ফিরিছে সর্বহারা

picture






দুনিয়া সৃষ্টি আল্লহ্*র, আইনও চলবে আল্লহ্*র

আল্লহ্*র দুনিয়ায় আইন চলবে আল্লহ্*
যে ফলেরগায়ে আঁটানো ঐ ফলের কভার
আমের গায়ে আমের, জামের গায়ে জামের
লিচুর গায়ে লিচুর, কাঁঠালের গায়ে কাঁঠালের
যার গায়ে তার কভার নিরাপদ, টেকসই, মানানসই
আল্লহ্* প্রকৃতিই এমন, বিপরীত দেখলাম কই?
মানুষের জন্য আল্লহ্* আইন মানানসই নিরাপদ
আল্লহ্* জন্য পৃথিবীতে আসা রূহের জগতের শপথ,
আল্লহ্*দুনিয়ায় আল্লহ্*র আইনকে যারা প্রতিপক্ষ ভাবে,
জানিনা তারা নিরাপদ টেকসই মানানসই কিভাবে...
আল্লহ্* জন্য আসা - বাস্তবে প্রতিফলন হল না
এতো নিজের বিরুদ্ধে নিজেরই ষড়যন্ত্র ছলনা
দুনিয়া সৃষ্টি আল্লহ্*, আইন চলবে আল্লহ্*
এর চেয়ে প্রিয় মজাদার কি হতে পারে আর?
সব শ্রেণীর মানুষের জন্যই তো কালাম সুখকর
সৃষ্টি থাকলে স্রষ্টার আইনী কাঠামোর ভিতর,
তবেই তো স্রষ্টা আরো বেশি খুশি হবেন
ভালবেসে সৃষ্টিকে রহমতের জালে জড়াবেন
মানুষ প্রিয়কে সাধ্যাতীত খুশি করতে ঋণে জড়ায়
আমার স্রষ্টা আল্লহ্* ব্যাপারটি এমন তো নয়
তিনি তো কুন বললে ফায়াকুন হও বললে হয়ে যায়
তার আইনে চলে তাকে খুশি করতে অসুবিধা কোথায়?
তার থেকে এসেছি, তারই হাতে আছি, তার কাছেই যাবো
তার আইনে চললে দুনিয়া-আখিরাত উভয় স্থান পাবো
তা এত বেশি যে আসমান-জমিনের সমান
এক কথায়, জান্নাতে হব আমরা আল্লহ্* মেহমান
সে আশা করাই ইসলামের মূল কথা
মুসলিম তো বটেই, সব মানুষেরই থাকার কথা একাত্বতা
তার থেকে এসেছি, তারই হাতে আছি, তার কাছেই যাবো
তার আইনে না চললে দুনিয়াতো বটেই, পরকালও হারাবো
তা এত বেশি যে আসমান-জমিনের সমান
যারা আল্লহ্* অসন্তোষের স্থান, জাহান্নামের মেহমান,
পাবে শুধু আগুন আর আগুন, আর যাক্কুম বৃক্ষের ফল
অনিবার্য ধ্বংস মানব-কুলে, জন্ম বিফল বিফল
তা থেকে বেঁচে থাকাই ইসলামী রাজনীতির মূল কথা
মুসলিম তো বটেই, সব মানুষেরই থাকার কথা একাত্বতা

দুনিয়া সৃষ্টি আল্লহ্*, আইনও চলবে আল্লহ্*
যে ফলেরগায়ে আঁটানো ঐ ফলের কভার

সমাপ্ত।

কিভাবে একজন মুসলিম শান্তিতে বসে থাকতে পারে

কিভাবে একজন মুসলিম শান্তিতে বসে থাকতে পারে
যখন মুসলিম নারীরা থাকে শত্রুর হাতে বন্দি!
যারা তাদের গাল চাপড়িয়ে কাঁদে এবং
তাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ডাকে।
যখন তাদের সম্ভ্রম বিনষ্ট হবার আশঙ্কা দেখা দেয়,
তখন অস্থির হয়ে তারা বলে,হায়!যদি আমরা ভুমিষ্টই না হতাম!
তারা এতই অসহায় যে, শত্রুর কবল থেকে হাত দিয়ে নিজেকে আড়াল করা ছাড়া
তাদের আর কিছুই করার থাকেনা।’’


সংগৃহীত

“হে হারামাইনের আকন্ঠ নিমগ্ন তাপস!


“হে হারামাইনের আকন্ঠ নিমগ্ন তাপস!
যদি তুমি আমাদের দেখতে,
তবে বুঝতে যে ইবাদতের ব্যাপারে এখনো শৈশবের ক্রীড়া-কৌতুকেই ডুবে আছ।
যদি কারও গলদেশ চোখের জলে সিক্ত হয়,
তবে আমাদের সীনা হয় রক্তে রঞ্জিত।
যদি কেউ কল্পনার রাজ্যে তার ভাবনার ঘোড়াকে ক্লান্ত করে,
তবে আমাদের ঘোড়াগুলো হয় যুদ্ধের দিনে পরিশ্রান্ত।
তোমাদের জন্য রয়েছে আবিরের সুবাস,
আর আমাদের আবির হলো,ঘোড়ার খুরের আঘাতে উত্থিত সুবাসিত ধুলো।
(প্রভুর শপথ!) আমাদের কাছে আমাদের নবীর সত্য ও
সঠিক বাণী পৌছেছে যে,আল্লাহর বাহিনীর পথের ধুলো
ও জাহান্নামের লকলকে আগুন কখনও ব্যক্তির নাসারন্ধ্রে একত্রিত হবেনা।
আল্লাহর কিতাব আমাদের মাঝে সত্য কথা বলে-
আল্লাহর পথের শহিদ কখনও মৃত নয়।’’

এই চলছে সময়,


এই চলছে সময়,
যার নেই কোন অপেক্ষা।
অত্যাচার তার সীমা করে অতিক্রম;
বোধহীন বিবেক-প্রাণ,মন ও দেহ।
হঠাৎ দৃশ্যমান এক বিষম ঘটন-
চলছেই যা অবিরত।
দেখ,যায় ঐ কাফেলা!
নিজ গতিতে প্রচন্ড দুর্বার স্পৃহায়;
বিরামহীন পথচলা,থামবার লেশ মাত্রও নেই।
দেখ,যায় কাফেলা!
দিগন্ত বিস্তৃত ঐ জান্নাতের পথে।

kobita

Excuse me, O goal of my life

Excuse me, O goal of my life

and forgive me, the errors of my life,

and pardon me

I couldn't have wounded

your heart, oh my heart

but Paradise is calling me

and wants me

Excuse me, and don't say

that I separated myself from you

How can I separate myself

from the one who cared

for me in this world

How can I make you cry, when you are

the one most precious to my soul and eye?

You are more precious than

the day which my heart loves

and you are the one who can

understand me most

If you knew all the facts

you couldn't blame me

The Muslim's humiliation is called peace

and the arabs are heedless and asleep

Mother, here is the

little child under the rubble

And his grieving mother

screaming for help

Mother, I can't let

this humiliation go on

And I can't let a crused infidel

disgrace my sister

I don't want the women of this world

I want the women of Paradise


[সংগৃহীত]
abc

Thursday, July 4, 2013

মিরাজের ঘটনা

মিরাজের ঘটনা কুরআন ও সহীহ হাদীছের মাধ্যমে প্রমাণিত। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ )سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِنْ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا إِنَّه هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ( “পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে রজনীর কিয়দাংশে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মাসজিদুল হারাম হতে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশকে আমি করেছিলাম বরকতময়। তাঁকে আমার নিদর্শন দেখাবার জন্যে। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোত, সর্বদ্রষ্টা। (সূরা বাণী ইস্রাঈলঃ ১) মেরাজ কখন সংঘটিত হয়েছিল? মেরাজ কখন হয়েছিল সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন দলীল পাওয়া যায় না। সুতরাং ২৭ রজব মেরাজ হওয়ার অনুমান ঠিক নয়। তবে বিশুদ্ধ কথা হল: তায়েফ থেকে ফেরত আসার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর মিরাজের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। (দেখুন: রাহীকুল মাখতুম) মিরাজ হয়েছিল স্বশরীরেঃ ইমাম ইবনুল কায়্যেম (রঃ) বলেনঃ বিশুদ্ধ বর্ণনা মতে মিরাজ হয়েছিল স্বশরীরে। তিনি প্রথমে বুরাকে আরোহন করে মাসজিদুল হারাম থেকে বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত ভ্রমণ করলেন। জিবরীল ফেরেশতা সাথেই ছিলেন। মসজিদের দরজার হাতলের সাথে বুরাক বেঁধে সেখানে নেমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবীদের ইমাম হয়ে নামায পড়লেন। মাসজিদুল হারাম থেকে বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত ভ্রমণকে ‘ইসরা অর্থাৎ রাত্রির ভ্রমণ বলা হয়। সেরাত্রেই বায়তুল মাকদিস হতে উর্ধাকাশ পর্যন্ত মিরাজের ঘটনা সংঘটিত হয়। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমি একদা কাবাঘরের নিকট ঘুমন্ত ও জাগ্রত অবস্থার মাঝামাঝি অবস্থায় ছিলাম। এমন সময় হিকমত (জ্ঞান) ও ঈমানে পরিপূর্ণ একটি স্বর্ণের পেয়ালা আনয়ন করা হলো। আমার বক্ষ হতে পেট পর্যন্ত ফেঁড়ে যমযমের পানি দিয়ে পেটের ভিতরের অংশ ধৌত করে তা ঈমান ও হিকমতের মাধ্যমে পরিপূর্ণ করে দেয়া হলো। তারপর আমার নিকট খচ্চরের চেয়ে একটু ছোট এবং গাধার চেয়ে বড় একটি সাদা রঙ্গের বুরাক নামক একটি বাহন আনয়ন করা হল। তিনি প্রথমে বুরাকে আরোহন করে মাসজিদুল হারাম থেকে বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত ভ্রমণ করলেন। জিবরীল ফেরেশতা সাথেই ছিলেন। মসজিদের দরজার হাতলের সাথে বুরাক বেঁধে সেখানে নেমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবীদের ইমাম হয়ে নামায পড়লেন। মাসজিদুল হারাম থেকে বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত ভ্রমণকে ‘ইসরা অর্থাৎ রাত্রির ভ্রমণ বলা হয়। অতঃপর তিনি সিঁড়ির মাধ্যমে উর্ধাকাশে ভ্রমণ শুরু করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ দুনিয়ার আকাশের নিকটবর্তী হলাম। জিবরীল ফেরেশতা আমার সাথেই ছিল। উপর থেকে আগমণকারীর পরিচয় জানতে চেয়ে জিজ্ঞেস করা হলো, কে? উত্তরে জিবরীল বললঃ আমি জিবরীল। আবার জিজ্ঞেস করা হলোঃ আপনার সাথের লোকটি কে? তিনি বললেনঃ মুহাম্মাদ। বলা হলোঃ তাকে কি আসতে বলা হয়েছে? জিবরীল বললেনঃ হ্যাঁ। আকাশের ফেরেশতাগণ বললেনঃ স্বাগতম, শুভ হোক তাঁর আগমণ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ প্রথম আকাশে আমি আদম (আঃ)এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি আমাকে স্বাগতম জানিয়ে বললেনঃ আমার ছেলে ও নবীর আগমণ শুভ হোক। দ্বিতীয় আকাশে যাওয়ার সময় আমাদেরকে একই প্রশ্ন করা হল। সেখানে গিয়ে আমি ঈসা এবং ইয়াহইয়া (আঃ)এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম। তাঁরা উভয়ই আমাকে সমাদর করলেন এবং স্বাগতম জানালেন। তৃতীয় আকাশে ইউসূফ (আঃ)এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে সালাম দিলাম। তিনিও আমাকে স্বাতম জানিয়ে বললেনঃ আমার ভাই ও নবীর আগমণ শুভ হোক। এমনিভাবে চতুর্থ আকাশে গিয়ে ইদরীস (আঃ)। পঞ্চম আকাশে হারুন (আঃ)। ষষ্ঠ আকাশে মূসা (আঃ)এর সাথে দেখা করলাম। মূসা (আঃ)কে সালাম দিয়ে বিদায় নিয়ে চলে আসার সময় তিনি কাঁদতে শুরু করলেন। তাঁকে ক্রন্দনের কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! এই ছেলেটিকে আমার অনেক পরে নবী হয়ে দুনিয়াতে প্রেরণ করা হয়েছে কিন্তু আমার চেয়ে অধিক সংখ্যক উম্মাত নিয়ে আমার পূর্বেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। পরিশেষে সপ্তম আকাশে গমণ করলাম। উপর থেকে আগমণকারীর পরিচয় জানতে চেয়ে জিজ্ঞেস করা হলঃ কে? উত্তরে জিবরীল বললেনঃ আমি জিবরীল। আবার জিজ্ঞেস করা হলোঃ আপনার সাথের লোকটি কে? তিনি বললেনঃ মুহাম্মাদ। বলা হলোঃ তাকে কি আসতে বলা হয়েছে? জিবরীল বললেনঃ হ্যাঁ। আকাশের ফেরেশতাগণ বললেনঃ স্বাগতম, শুভ হোক তাঁর আগমণ। সপ্তম আকাশে গিয়ে ইবরাহীম (আঃ)এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি বললেনঃ আমার সন্তান ও নবীকে স্বাগতম। মিরাজের রাত্রিতে নবী (সাঃ) যে সমস্ত নিদর্শন দেখেছেনঃ মেরাজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ্‌ তাআলা বলেনঃ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا (মিরাজ সংঘটিত হয়েছিল) তাঁকে আমার নিদর্শন দেখাবার জন্যে। (সূরা বাণী ইসরাঈলঃ ১) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই রাত্রিতে অসংখ্য বড় বড় নিদর্শন দেখেছেন। তম্মধ্যে: ১) মানব জাতির পিতা আদম (আঃ)কে দেখেছেন। তার ডান পাশে ছিলে শহীদদের (জান্নাতীদের) রূহ এবং বাম পাশে ছিল জাহান্নামীদের রূহ। ২) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম বলেন: অতঃপর আমার সামনে বায়তুল মামূর উম্মুক্ত করা হলো। বায়তুল মামূর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে জিবরীল বললেনঃ এটি হলো বায়তুল মামূর। এতে প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা নামায আদায় করে। এক বার যে সেখান থেকে বের হয়ে আসে কিয়ামতের পূর্বে সে আর তাতে প্রবেশের সুযোগ পাবেনা। ৩) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম বলেন: অতঃপর আমার জন্যে সিদরাতুল মুনতাহা তথা সিমান্তের কূল বৃক্ষ উম্মুক্ত করা হল। এই বৃক্ষের ফলগুলো ছিল কলসীর ন্যায় বড়। গাছের পাতাগুলো ছিল হাতীর কানের মত বৃহদাকার। ৪) তিনি গাছের গোড়াতে চারটি নদী দেখতে পেলেন। দু’টি চলে গেছে ভিতরের দিকে এবং দুটি চলে গেছে বাহিরের দিকে। জিবরীলকে আমি এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ ভিতরের দিকে প্রবাহিত নদী দুটি জান্নাতে চলে গেছে এবং বাহিরের নদী দুটি হলো ফোরাত ও নীল। ফোরাত ও নীল দেখার অর্থ হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর মিশন অচিরেই ঐ নদী দুটির অঞ্চলে পৌঁছে যাবে এবং ঐ সমস- অঞ্চলের অধিবাসীরা যুগে যুগে ইসলামের পতাকা বহন করবে। অর্থ এই নয় যে এদুটি নদী জান্নাত থেকে বের হয়ে এসেছে। ৫) মিরাজের রাত্রিতে তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় জিবরীল ফেরেশতাকে আসল আকৃতিতে দেখলেন। অথচ ইতোপূর্বে তিনি আরেকবার দুনিয়াতে তাঁকে দেখেছিলেন। ৬) তিনি বেনাযীর শাস্তি দেখেছেন। সহীহ বুখারীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর দীর্ঘ হাদীছে এসেছে, وَإِنَّا أَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُضْطَجِعٍ وَإِذَا آخَرُ قَائِمٌ عَلَيْهِ بِصَخْرَةٍ وَإِذَا هُوَ يَهْوِي بِالصَّخْرَةِ لِرَأْسِهِ فَيَثْلَغُ رَأْسَهُ فَيَتَهَدْهَدُ الْحَجَرُ هَا هُنَا فَيَتْبَعُ الْحَجَرَ فَيَأْخُذُهُ فَلَا يَرْجِعُ إِلَيْهِ حَتَّى يَصِحَّ رَأْسُهُ كَمَا كَانَ ثُمَّ يَعُودُ عَلَيْهِ فَيَفْعَلُ بِهِ مِثْلَ مَا فَعَلَ الْمَرَّةَ الْأُولَى “আমরা এক শায়িত ব্যক্তির কাছে আসলাম। তার মাথার কাছে পাথর হাতে নিয়ে অন্য একজন লোক দাড়িয়ে ছিল। দাড়ানো ব্যক্তি শায়িত ব্যক্তির মাথায় সেই পাথর নিক্ষেপ করছে। পাথরের আঘাতে তার মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে এবং পাথরটি বলের মত গড়িয়ে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে। লোকটি পাথর কুড়িয়ে আনতে আনতে আবার তার মাথা ভাল হয়ে যাচ্ছে। দাড়ানো ব্যক্তি প্রথমবারের মত আবার আঘাত করছে এবং তার মাথাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিচ্ছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সফরসঙ্গী ফেরেশতাদ্বয়কে জিজ্ঞেস করলেনঃ কি অপরাধের কারণে তাকে এভাবে শাস্তি দেয়া হচ্ছে? উত্তরে তারা বললেনঃ এব্যক্তি কুরআন শিক্ষা করেছিল। কিন্তু কুরআন অনুযায়ী আমল করেনি এবং সে ফরজ নামাযের সময় ঘুমিয়ে থাকত। কিয়ামত পর্যন্ত তাকে এভাবে শাসস্ত দেয়া হবে। (সহীহ বুখারী) ৬) তিনি সুদখোরের শাসি- দেখেছেন। সহীহ বুখারীতে সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর দীর্ঘ হাদীছে এসেছে, فَأَتَيْنَا عَلَى نَهَرٍ حَسِبْتُ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ أَحْمَرَ مِثْلِ الدَّمِ وَإِذَا فِي النَّهَرِ رَجُلٌ سَابِحٌ يَسْبَحُ وَإِذَا عَلَى شَطِّ النَّهَرِ رَجُلٌ قَدْ جَمَعَ عِنْدَهُ حِجَارَةً كَثِيرَةً وَإِذَا ذَلِكَ السَّابِحُ يَسْبَحُ مَا يَسْبَحُ ثُمَّ يَأْتِي ذَلِكَ الَّذِي قَدْ جَمَعَ عِنْدَهُ الْحِجَارَةَ فَيَفْغَرُ لَهُ فَاهُ فَيُلْقِمُهُ حَجَرًا فَيَنْطَلِقُ يَسْبَحُ ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَيْهِ كُلَّمَا رَجَعَ إِلَيْهِ فَغَرَ لَهُ فَاهُ فَأَلْقَمَهُ حَجَرًا “আমরা একটি রক্তের নদীর কাছে আসলাম। দেখলাম নদীতে একটি লোক সাঁতার কাটছে। নদীর তীরে অন্য একটি লোক কতগুলো পাথর একত্রিত করে তার পাশে দাড়িয়ে আছে। সাঁতার কাটতে কাটতে লোকটি যখন নদীর কিনারায় পাথরের কাছে দাড়ানো ব্যক্তির নিকটে আসে তখন দাড়ানো ব্যক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দিচ্ছে। পাথর মুখে নিয়ে লোকটি আবার সাঁতরাতে শুরু করে। যখনই লোকটি নদীর তীরে আসতে চায় তখনই তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দেয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর কারণ জানতে চাইলে ফেরেশতাদ্বয় বললেনঃ এরা হলো আপনার উম্মতের সুদখোর”। (সহীহ বুখারী) ৭) তিনি ইয়াতীমের মাল আত্মসাৎকারীকেও দেখেছেন। তাদের ঠোঁটের আকার আকৃতি ছিল উটের ঠোঁটের মত। তারা পাথরের টুকরোর মত আগুনের ফুলকী মুখের মধ্যে পুরতেছিল এবং সেগুলো পায়খানার রাস্তা দিয়ে বের হচ্ছিল। ৮) তিনি ব্যভিচারী নারী পুরুষের শাস্তি দেখেছেন। সহীহ বুখারীতে সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর দীর্ঘ হাদীছে কবরে ব্যভিচারীর ভয়াবহ শাস্তির বর্ণনা এসেছে। তিনি বলেনঃ فَأَتَيْنَا عَلَى مِثْلِ التَّنُّورِ قَالَ فَأَحْسِبُ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ فَإِذَا فِيهِ لَغَطٌ وَأَصْوَاتٌ قَالَ فَاطَّلَعْنَا فِيهِ فَإِذَا فِيهِ رِجَالٌ وَنِسَاءٌ عُرَاةٌ وَإِذَا هُمْ يَأْتِيهِمْ لَهَبٌ مِنْ أَسْفَلَ مِنْهُمْ فَإِذَا أَتَاهُمْ ذَلِكَ اللَّهَبُ ضَوْضَوْا “আমরা একটি তন্দুর চুলার নিকট আসলাম। যার উপরিভাগ ছিল সংকীর্ণ এবং ভিতরের অংশ ছিল প্রশস্ত। তার ভিতরে আমরা কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম। দেখতে পেলাম তাতে রয়েছে কতগুলো উলঙ্গ নারী-পুরুষ। তাদের নিচের দিক থেকে আগুনের শিখা প্রজ্বলিত করা হচ্ছে। অগ্নিশিখা প্রজ্ব্বলিত হওয়ার সাথে সাথে তারা উচ্চঃস্বরে চিৎকার করছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কারণ জানতে চাইলে ফেরেশতাদ্বয় বললেনঃ এরা হলো আপনার উম্মতের ব্যভিচারী নারী-পুরুষ”। (বুখারী) ব্যভিচারীর শাস্তির অন্য একটি চিত্রঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিরাজের রাত্রিতে একদল লোকের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন তাদের সামনে একটি পাত্রে গোশত রান্না করে রাখা হয়েছে। অদূরেই অন্য একটি পাত্রে রয়েছে পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত কাঁচা গোশত। লোকদেরকে রান্না করে রাখা গোশত থেকে বিরত রেখে পঁচা এবং দুর্গন্ধযুক্ত, কাঁচা গোশত খেতে বাধ্য করা হচ্ছে। তারা চিৎকার করছে এবং একান্ত অনিচ্ছা সত্বেও তা থেকে ভক্ষণ করছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিবরীল ফেরেশতাক জিজ্ঞেস করলেনঃ এরা কোন শ্রেণীর লোক? জিবরীল বললেনঃ এরা আপনার উম্মতের ঐ সমস্ত পুরুষ লোক যারা নিজেদের ঘরে পবিত্র এবং হালাল স্ত্রী থাকা সত্বেও অপবিত্র এবং খারাপ মহিলাদের সাথে রাত্রি যাপন করত। (আল-খুতাবুল মিম্বারিয়াহ, ডঃ সালেহ ফাওযান) ৯) জান্নাত ও জাহান্নাম দেখেছেন। ১০) তিনি সেই রাত্রে জাহান্নামের প্রহরী মালেক ফেরেশতাকে দেখেছেন। তাঁর দিকে ফিরে তাকাতেই তিনি আমাকে প্রথমেই সালাম দিলেন। (বুখারী, কিতাবু আহাদীছুল আম্বীয়া, হাদীছ নং- ৩১৮২। মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদীছ নং- ২৫১) ১১) বায়তুল মাকদিসে নবীদের ইমাম হয়ে নামায পড়েছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকালে ঘুম থেকে উঠে সে রাত্রিতে দেখে আসা নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে যখন কুরাইশদেরকে সংবাদ দিলেন, তখন তারা এই ঘটনাকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর উপর তারা অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিল। তারা তাঁর নিকট বায়তুল মাকদিসের বর্ণনা পেশ করার দাবী জানালো। আল্ল্লাহ বায়তুল মাকদিসে দৃশ্য তার চোখের সামনে উম্মুক্ত করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখে দেখে সেখানকার সকল নিদর্শন বলে দিলেন। তারা একটি কথাও অস্বীকার করতে পারলনা। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আমি একদা কাবার প্রাঙ্গনে ছিলাম। কুরাইশরা আমাকে বায়তুল মাকদিসের এমন জিনিষ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল যা আমার স্বরণ ছিলনা। এতে আমি সংকটে পড়ে গেলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ আমার জন্যে বায়তুল মাকদিসকে চোঁখের সামনে উঠিয়ে ধরলেন। দেখে দেখে আমি তাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিলাম। মিরাজের শিক্ষাঃ ১) ঈমানী পরীক্ষাঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বায়তুল মাকদিস ভ্রমণ করে এসে সকালে মানুষের কাছে তা বলতে শুরু করলেন। এ ঘটনা শুনে কতিপয় দুর্বল ঈমানদার মুরতাদ হয়ে গেল। মুশরিকদের কিছু লোক দৌড়িয়ে আবূ বকর (রাঃ) নিকট গিয়ে বললঃ তোমর বন্ধুর খবর শুনবে কি? সে বলছে, আজ রাতের ভিতরেই সে নাকি বায়তুল মাকদিস ভ্রমণ করে চলে এসেছে। তিনি বললেনঃ আসলেই কি মুহাম্মাদ তা বলছে? তারা এক বাক্যে বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ যদি বলেই থাকে, তাহলে সত্য বলেছেন। তারা আবার বললঃ তুমি কি বিশ্বাস কর যে, সে এক রাতের ভিতরে বায়তুল মাকদিস ভ্রমণ করে সকাল হওয়ার পূর্বেই আবার মক্কায় চলে এসেছে? উত্তরে তিনি বললেনঃ আমি এর চেয়েও দূরের সংবাদকে বিশ্বাস করি। তাঁর কাছে সকাল-বিকাল আকাশ থেকে সংবাদ আসে। আমি তা বিশ্বাস করি। সে দিনই আবূ বকর (রাঃ) কে পরম সত্যবাদী তথা সিদ্দীক উপাধীতে ভূষিত করা হয়। (হাকেম, তৃতীয় খন্ড, পৃষ্ঠা নং- ৮১, হাদীছ নং- ৩১৮২, ইমাম আলবানী হাদীছটিকে সহীহ বলেছেন) ২) দাঈদের জন্য শিক্ষাঃ মিরাজের ঘটনায় দ্বীনের দাঈদের জন্য এক বিশেষ শিক্ষা রয়েছে। তিনি মিরাজ থেকে ফেরত এসে মানুষের কাছে ঘটনা খুলে বলতে ইচ্ছা প্রকাশ করলে উম্মে হানী বিনতে আবু তালেব (রাঃ) তাঁকে বললেনঃ আমার আশঙ্কা হচ্ছে, লোকেরা আপনাকে মিথ্যাবাদী বলবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তাদের কাছে ঘটনা খুলে বলবো। আমাকে তারা মিথ্যাবাদী বললেও। সুতরাং দ্বীনের দাঈগণের উচিত, সত্য প্রকাশের ক্ষেত্রে তারা কোন প্রকার দ্বিধাবোধ করবে না এবং মানুষ সেটাকে গ্রহণ করবে কি করবে না- এ ধরণের কোন চিন্তা-ভাবনা করবে না; বরং বলিষ্ঠ কন্ঠে মানুষের সামনে সত্যকে তুলে ধরবে। ৩) পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরজ হয়ঃ মেরাজের রাতে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরজ করা হয়েছে। মিরাজ থেকে ফেরত আসার সময় ৬ষ্ঠ আসমানে মূসা (আঃ)এর সাথে সাক্ষাৎ হল। মূসা (আঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ কি নিয়ে আসলেন? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আমার উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরজ করা হয়েছে। মূসা (আঃ) আমি মানুষের অবস্থা তোমার চেয়ে অনেক বেশী অবগত। বানী ইসরাঈলকে আমি ভালভাবেই পরীক্ষা করে দেখেছি। তোমার উম্মাত পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায পড়তে পারবে না। তুমি ফেরত যাও এবং কমাতে বল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আমি মূসা (আঃ)এর পরামর্শ মোতাবেক ফেরত গিয়ে কমাতে বললাম। চল্ল্লিশ করা হলো। আবার মূসা আলাইহিস সালামের পরামর্শ মোতাবেক ২য় বার আবদারের প্রেক্ষিতে ত্রিশ করা হলো। পুনরায় যাওয়ার প্রেক্ষিতে বিশ ওয়াক্ত করে দেয়া হলো। অতঃপর দশে পরিণত হলো। মূসা (আঃ)এর কাছে দশ ওয়াক্ত নিয়ে ফেরত আসলে তিনি আবার যেতে বললেন। এবার পাঁচ ওয়াক্ত করা হলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামায নিয়ে মূসা (আঃ)এর কাছে আগমণ করলাম। তিনি আমাকে আবার যেতে বললেন। আমি তাঁকে বললামঃ আমি গ্রহণ করে নিয়েছি। তখন আল্ল্লাহর পক্ষ হতে ঘোষণা করা হলোঃ আমার ফরজ ঠিক রাখলাম। কিন’ বান্দাদের উপর থেকে সংখ্যা কমিয়ে দিলাম। আর আমি প্রতিটি সৎআমলের বিনিময় দশ পর্যন- বাড়িয়ে দিব। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামায সঠিকভাবে আদায় করলে তাকে পঞ্চাশ ওয়াক্তের ছওয়াব দেয়া হবে। (বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবু বাদইল খাল্‌ক, হাদীছ নং- ৪৪৫৮, মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদীছ নং- ২৩৮) ৪) আল্লাহ্‌ তাআলা যে আরশে আযীমে সমুন্নত মিরাজের ঘটনা তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। ৫) সকল ইবাদতের মধ্যে নামায হচ্ছে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ ইবাদত। কারণ আল্লাহ্‌ তাআলা অন্যান্য ইবাদত জমিনে ফরজ করেছেন। আর নামায ফরজ করেছেন তাঁর প্রিয় বন্ধুকে কাছে ডেকে নিয়ে সাত আসমানের উপরে। এতে নামাযের গুরুত্বের কথাটি সহজেই অনুধাবন করা যায়। ৬) নামায পরিত্যাগ করা কঠিন অপরাধ। তাই বেনামাযীর শাস্তিও অত্যন্ত কঠোর। ৭) ব্যভিচার একটি ঘৃণিত কাজ। এর শাস্তিও অত্যন্ত নিকৃষ্ট। ৮) সুদখোরের ভয়াবহ পরিণতি। মিরাজ সম্পর্কে কতিপয় ভ্রান্ত বিশ্বাস ও তাঁর প্রতিবাদঃ ক) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দীর্ঘ ২৭ বছর পর্যন্ত মিরাজে থাকার গল্প কাল্পনিক। খ) বড় পীরের ঘাড়ে চরে সিদরাতুল মুন্তাহা পার হয়ে আল্লাহর দরবারে পৌঁছার কিচ্ছা বানোয়াট। গ) ২৭ রজবে বিশেষ ইবাদত পালন করা বা রজব দিবস পালন করা বিদআত। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ শবে মিরাজ উপলক্ষে কোন ইবাদত করেন নি বা করতে বলেন নি। সুতরাং দ্বীনের ক্ষেত্রে সকল নব আবিস্কৃত বিষয়ই বিদআত, যা থেকে দূরে থাকা সকল মুসলিমের উপর করণীয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ “যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের মধ্যে নতুন বিষয় তৈরী করবে যা তার অন্তর্ভূক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত হবে। (বুখারী ও মুসলিম) তিনি আরও বলেনঃ مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ “যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করবে, যে বিষয়ে আমাদের অনুমোদন নেই, তা আমলকারীর উপর প্রত্যাখ্যাত হবে। (সহীহ মুসলিম) ঘ) আল্ল্লাহ্‌কে স্বচক্ষে দেখার কথাটি সঠিক নয়। ইমাম ইবনুল কায়্যেম (রঃ) আল্লাহকে দেখার ব্যাপারে আলেমদের মতবিরোধ বর্ণনা করেছেন। তবে বিশুদ্ধ কথা হলো, তিনি আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখেন নি। কারণ কোন সাহাবী স্বচক্ষে দেখার পক্ষে কোন বর্ণনা উল্লেখ করেন নি। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে যে বর্ণনা এসেছে, আল্লাহকে দেখার অর্থ হলো অন্তর চক্ষু দিয়ে দেখা। কপালের চক্ষু দিয়ে দেখা উদ্দেশ্য নয়। (যাদুল মাআদ, (৩/৩০) আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখার ব্যাপারে আয়েশা (রাঃ) এর হাদীস: عن عَائِشَةَ فَقَالَتْ ثَلَاثٌ مَنْ تَكَلَّمَ بِوَاحِدَةٍ مِنْهُنَّ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ قُلْتُ مَا هُنَّ قَالَتْ مَنْ زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى رَبَّهُ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَة قَالَ قَالَتْ وَمَنْ زَعَمَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَتَمَ شَيْئًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ وَاللَّهُ يَقُولُ ( يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ قَالَتْ وَمَنْ زَعَمَ أَنَّهُ يُخْبِرُ بِمَا يَكُونُ فِي غَدٍ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ وَاللَّهُ يَقُولُ ( قُلْ لَا يَعْلَمُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ ) আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি বলবে যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার রবকে স্বচক্ষে দেখেছেন সে আল্লাহর উপর বিরাট মিথ্যাচার করল। যে ব্যক্তি বলবে যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর কিতাবের কিছু অংশ তিনি গোপন করেছেন, সে আল্লাহর উপর বিরাট মিথ্যা রচনা করল। আল্লাহ্‌ তাআলা বলেনঃ হে রসূল! পৌঁছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তার পয়গাম কিছুই পৌঁছালেন না। (সূরা মায়িদাঃ ৬৭) আর যে ব্যক্তি বিশ্বাস করবে যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াস সাল্লাম (গায়েবের) আগাম খবর দিতে পারতেন সেও আল্লাহর উপর চরম মিথ্যা রচনা করল।” (তিরমিযী-সহীহ) তিনি আল্লাহর খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়ে ছিলেন এবং অন্তর দিয়ে তা অনুভব করেছেন। কিন’ স্বচক্ষে দেখার কোন দলীল পাওয়া যায় না। সুতরাং মিরাজ সম্পর্কে সকল কাল্পনিক ও মিথ্যা ঘটনা পরিহার করে তা থেকে সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করা আমাদের সকলের জন্য জরুরী।

ঘটনা

আববাসীয় খলীফা মামূনুর রশীদের দরবারে মাঝে মাঝে শিক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হ’ত। এতে তৎকালীন বিভিন্ন বিষয়ে বিদগ্ধ পন্ডিতগণ অংশগ্রহণ করতেন। একদিন এমনি এক আলোচনা সভায় সুন্দর চেহারাধারী, সুগন্ধযুক্ত উত্তম পোষাক পরিহিত জনৈক ইহুদী পন্ডিত আগমন করলেন এবং অত্যন্ত প্রাঞ্জল, অলংকারপূর্ণ এবং জ্ঞানগর্ভ আলোচনা রাখলেন। বিস্মিত খলীফা সভা শেষে তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি ইহুদী? সে স্বীকার করল। মামূন তাকে বললেন, আপনি যদি মুসলমান হয়ে যান তবে আপনার সাথে উত্তম ব্যবহার করা হবে। তিনি উত্তরে বললেন, পৈত্রিক ধর্ম বিসর্জন দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এই বলে তিনি প্রস্থান করলেন। কিন্তু এক বছর পর তিনি মুসলমান হয়ে আবার দরবারে আগমন করলেন এবং আলোচনা সভায় ইসলামী ফিক্বহ সম্পর্কে সারগর্ভ ও যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করলেন। সভাশেষে মামূন তাকে ডেকে বললেন, আপনি কি ঐ ব্যক্তি নন, যিনি গত বছর এসেছিলেন? তিনি বললেন, হ্যঁা আমিই ঐ ব্যক্তি। মামূন জিজ্ঞেস করলেন, তখন তো আপনি ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলেন। এরপর এখন মুসলমান হওয়ার কি এমন কারণ ঘটল? তিনি বললেন, এখান থেকে ফিরে যাওয়ার পর আমি বর্তমান কালের বিভিন্ন ধর্মগুলো পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখার মনস্থ করি। আমি একজন সুন্দর হস্তলেখাবিশারদ। স্বহস্তে গ্রন্থাদি লিখে উচুঁ দামে বিক্রয় করি। তাই পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে তাওরাতের তিনটি কপি লিপিবদ্ধ করলাম এবং এগুলির অনেক জায়গায় নিজের পক্ষ থেকে কিছু কমবেশী করে লিখলাম। অতঃপর কপিগুলো নিয়ে আমি ইহুদীদের উপাসনালয়ে উপস্থিত হ’লাম। তারা অত্যন্ত আগ্রহ সহ্কারে আমার কপিগুলো কিনে নিল। অতঃপর একইভাবে ইঞ্জীলের তিন কপি করলাম এবং তাতে কমবেশী করে লিখে খ্রীষ্টানদের গীর্জায় নিয়ে গেলাম। সেখানেও তারা খুব আগ্রহভরে কপিগুলো ক্রয় করে নিল। এরপর আমি কুরআনের ক্ষেত্রেও একই কাজ করলাম এবং সে কুরআনের বেলাও আমি কম-বেশী করে লিখলাম এবং বিক্রয়ের জন্য নিয়ে গেলাম। কিন্তু ক্রয়কারীকে দেখলাম, সে প্রথমে আমার লেখা কপিটি নির্ভুল কি না যাচাই করে দেখল। অতঃপর সেখানে কমবেশী দেখতে পেয়ে ক্রয় না করে কপিগুলি ফেরত দিল। এ ঘটনা দর্শনে আমি এ শিক্ষাই গ্রহণ করলাম যে, নিশ্চয়ই এ গ্রন্থ সংরক্ষিত, আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং এর সংরক্ষক। আর এই উপলব্ধিই আমার ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার কারণ হয়ে দাড়ালো। এই ঘটনা বর্ণনাকারী কাযী ইয়াহইয়া বিন আকছাম বলেন, ঘটনাক্রমে সে বছরই আমার হজ্জব্রত পালন করার সৌভাগ্য হয়। সেখানে প্রখ্যাত আলেম সুফিয়ান ইবনে ওয়ায়নার সাথে সাক্ষাত হ’লে ঘটনাটি আমি তার নিকটে ব্যক্ত করলাম। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে এরূপ হওয়াই যথার্থ। কারণ কুরআনেই তো এ চিরন্তন সত্যের সমর্থনে আয়াত রয়েছে। তিনি বললেন, কোথায় রয়েছে? সুফিয়ান বললেন, কুরআনে যেখানে তাওরাত ও ইঞ্জীলের আলোচনা এসেছে, সেখানে এসেছে, بِمَا اسْتُحْفِظُوْا مِنْ كِتَابِ الله وَكانُوْا عَلَيْهِ شُهَداءَ ‘তাদেরকে ইলাহী গ্রন্থের দেখাশোনার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং তারা এর রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত ছিলেন’ (মায়েদা ৫/৪৪) অতঃপর যখন তারা দায়িত্ব পালন করেনি তখন গ্রন্থদ্বয় বিকৃত ও পরিবর্তিত হয়ে বিনষ্ট হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে কুরআনের ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُوْنَ ‘আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতরণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক’ (হিজর ১৫/৯) আল্লাহ নিজেই আমাদের জন্য কুরআনকে সংরক্ষণ করেছেন ফলে তা বিনষ্ট হয়নি (আল-মুনতাযাম ফিত তারীখ ১০/৫১; কুরতুবী ১০/৫; ইবনু হাজার, লিসানুল মীযান ১/৩৮৮)।

কাযী শুরাইহ বিন হারেছ আল-কিন্দী

কাযী শুরাইহ বিন হারেছ আল-কিন্দী ইসলামের ইতিহাসে ন্যায়পরায়ণতা, বুদ্ধিমত্তা ও অগাধ পান্ডিত্যের অধিকারী এক অনন্যসাধারণ বিচারপতি ছিলেন। তিনি একাধারে ওমর, ওছমান, আলী এবং মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর শাসনামলে বিচারপতি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ৬০ বছর যাবৎ বিচারকার্য পরিচালনার পর ৭৮ হিজরী সনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার নিরপেক্ষ বিচারের দীপ্তিমান ইতিহাস সর্বকালেই মানবজাতিকে প্রেরণা জুগিয়ে থাকে। নিম্নে তার দু’টি ঘটনা বিবৃত হ’ল- [১] ইসলামের ২য় খলীফা ওমর (রাঃ) একদা এক ব্যক্তির নিকট থেকে ভালভাবে দেখেশুনে একটি ঘোড়া ক্রয় করলেন। অতঃপর ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করে স্বীয় গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হ’লেন। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পর ঘোড়াটি অসুস্থ হয়ে পড়ল এবং খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলতে লাগল। ওমর (রাঃ) কালবিলম্ব না করে সরাসরি বিক্রেতার নিকটে ফিরে এলেন এবং তাকে বললেন, তুমি তোমার ঘোড়া ফিরিয়ে নাও, এটা ত্রুটিযুক্ত। বিক্রেতা বলল, হে আমীরুল মুমিনীন! আমি ঘোড়াটি ফেরত নিব না, কেননা আপনি তা সুস্থ ও সবল অবস্থাতেই আমার নিকট থেকে ক্রয় করেছেন। ওমর (রাঃ) বললেন, ঠিক আছে, তাহ’লে তোমার মাঝে ও আমার মাঝে একজন বিচারক নির্ধারণ করা হোক। বিক্রেতা বললেন, ঠিক আছে, কাযী শুরাইহ আমাদের মাঝে ফায়ছালা করবেন। ঘটনার বর্ণনাকারী শা‘বী বলেন, তারা উভয়েই শুরাইহের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হ’লেন এবং তার নিকটে পৌঁছে তাকে প্রকৃত ঘটনা বিবৃত করলেন। কাযী শুরাইহ ঘোড়ার মালিকের অভিযোগ শ্রবণ করে ওমর (রাঃ)-কে বললেন, আপনি কি ঘোড়াটিকে সবল ও সুস্থ অবস্থায় কিনেছিলেন? ওমর (রাঃ) বললেন, জি হ্যাঁ। বুদ্ধিমত্তা ও ন্যায়পরায়ণতার মূর্ত প্রতীক কাযী শুরাইহ ঘোষণা করলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি যা ক্রয় করেছেন তা গ্রহণ করে সন্তুষ্ট হৌন অথবা যে অবস্থায় ঘোড়াটিকে গ্রহণ করেছিলেন সে অবস্থায় ফেরত প্রদান করুন। হতচকিত খলীফা মুগ্ধ দৃষ্টিতে কাযী শুরাইহের দিকে তাকিয়ে বললেন, হ্যাঁ! এটাই তো ন্যায়বিচার। হে বিচারপতি! আপনি কুফায় গমন করুন। আমি আপনাকে কুফার প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ দান করলাম। (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়াহ ৯/২৫) [২] ৪র্থ খলীফা আলী (রাঃ) একদিন বাজারে গিয়ে দেখেন, জনৈক খৃষ্টান লোক একটা লোহার বর্ম বিক্রি করছে। আলী (রাঃ) তৎক্ষণাৎ বর্মটি চিনে ফেললেন এবং বললেন, এ বর্ম তো আমার। চল, আদালতে তোমার ও আমার মধ্যে ফায়ছালা হবে। সেসময় ঐ আদালতের বিচারক ছিলেন কাযী শুরাইহ। তিনি যখন আমীরুল মুমিনীনকে আসতে দেখলেন, তখন তাঁর বসার স্থান থেকে উঠে দাঁড়ালেন এবং আলী (রাঃ)-কে নিজ স্থানে বসিয়ে তিনি তাঁর পাশে বসলেন। আলী (রাঃ) বিচারপতি শুরাইহকে বললেন, এই ব্যক্তির সাথে আমার বিরোধ মিটিয়ে দিন। শুরাইহ বললেন, আমীরুল মুমিনীন! আপনার বক্তব্য কি? আলী বললেন, এই বর্মটি আমার। অনেক দিন হ’ল এটি হারিয়ে গেছে। আমি তা বিক্রয় করিনি, দানও করিনি। শুরাইহ বললেন, ওহে খৃষ্টান! আমীরুল মুমিনীন যা বলছেন, সে ব্যাপারে তুমি কী বলতে চাও? সে বলল, আমি আমীরুল মুমিনীনকে মিথ্যাবাদিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করছি না, তবে বর্মটি আমারই। শুরাইহ বললেন, বর্মটিতো এই ব্যক্তির দখলে রয়েছে। কোন প্রমাণ ছাড়া তার কাছ থেকে সেটা নেয়া যাবে বলে আমি মনে করি না। আপনার কাছে কোন প্রমাণ আছে কি? আলী (রাঃ) হেসে ফেললেন এবং বললেন, শুরাইহ ঠিকই বলেছেন। আমার নিকট তো কোন প্রমাণ নেই। নিরুপায় শুরাইহ খৃষ্টানের পক্ষেই রায় দিলেন এবং সে বর্মটি গ্রহণ করে রওয়ানা হ’ল। কিন্তু কিছু দূর গিয়ে সে আবার ফিরে এল এবং বলল, আমি সাক্ষী দিচ্ছি যে, এটাই নবীদের বিধান ও শিক্ষা। আমীরুল মুমিনীন নিজের দাবী বিচারকের সামনে পেশ করেছেন, আর বিচারক তার বিপক্ষে রায় দিচ্ছেন। আল্লাহ্‌র কসম, হে আমীরুল মুমিনীন! এটা আপনারই বর্ম। আমি এটা আপনার কাছে বিক্রয় করেছিলাম। পরে তা আপনার মেটে রঙের উটটির উপর থেকে ছিটকে পড়ে গেলে আমি ওটা তুলে নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ্‌ ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল। আলী (রাঃ) বললেন, তুমি যখন মুসলমান হয়ে গেলে, তখন এ বর্ম এখন থেকে তোমার। অতঃপর আলী (রাঃ) তাকে ভাল দেখে একটা ঘোড়াও উপহার দিলেন এবং তাতে চড়িয়ে তাকে বিদায় দিলেন। ইমাম শা‘বী বলেন, আমি পরবর্তীকালে এই নওমুসলমানকে নাহরাওয়ানের যুদ্ধে খারেজীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে দেখেছি। অপর বর্ণনায় শা‘বী বলেন, আলী (রাঃ) এছাড়া তার জন্য দু’হাযার দিরহাম ভাতাও নির্ধারণ করে দেন। অবশেষে এই ব্যক্তি ছিফফীনের যুদ্ধে আলী (রাঃ)-এর পক্ষে লড়াই করে শহীদ হন। (বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা ১০/১৩৬ হা/২০২৫২, ১০/১৩৬; আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ ৮/৫) শিক্ষা: [1] ন্যায়বিচার মানবতাকে সমুন্নত করে। [2] আল্লাহর আইনের সামনে রাজা-প্রজা সকলে সমান। [3] ক্ষমাশীল আচরণ দিয়ে মানব হৃদয় জয় করা যায়। [4] বিচারপতিকে বিচক্ষণ, মহৎ ও সৎসাহসী হ’তে হয়। [5] ইসলামী খেলাফতে মুসলিম-অমুসলিম সকলের নাগরিক অধিকার সমান।

কোয়ান্টাম মেথড : একটি শয়তানী ফাঁদ

এই ফেতনা বাংলাদেশের হাজারও মুসলমানকে শিরক্ কুফরী আর বিদ’আত করতে বাধ্য করছে! মেডিটেশনের আড়ালে ভন্ড গুরুজীর রমরমা ব্যবসা!! “আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন বা জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করলাম।” [সূরা আল মায়েদাহ:-৩] “সত্যতম বাণী আল্লাহর কিতাব, সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মাদের আদর্শ, সবচেয়ে খারাপ বিষয় হল নতুন উদ্ভাবিত বিষয়। প্রতিটি নতুন উদ্ভাবিত বিষয়ই বিদআত, আর প্রতিটি বিদআতই পথভ্রষ্টতা।” [সহীহ্ মসলিম:- ২/৫৯৩] “যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কিছুকে দ্বীন হিসাবে তালাশ করবে, তার নিকট থেকে তা কবুল করা হবেনা। আর আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” [সূরা আলে ইমরান:-৮৫] আল্লাহর বানী এত্ত স্পষ্ট হওয়ার পরেও এক জন মুসলমানের জীবনে শান্তি খুজতে কোয়ান্টাম মেথড এর সাহাজ্য নিতে হয় কেন এবং কোন সাহসে!?? কোয়ান্টাম মেথড : একটি শয়তানী ফাঁদ ———————————————– মানুষকে আল্লাহর ইবাদত থেকে ফিরিয়ে কথিত অন্তর্গুরুর ইবাদতে লিপ্ত করার অভিনব প্রতারণার নাম হ’ল কোয়ান্টাম মেথড। হাযার বছর পূর্বে ফেলে আসা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান পাদ্রী ও যোগী-সন্ন্যাসীদের যোগ-সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মেডিটেশন’। হতাশাগ্রস্ত মানুষকে সাময়িক প্রশান্তির সাগরে ভাসিয়ে এক কল্পিত দেহভ্রমণের নাম দেওয়া হয়েছে Science of Living বা জীবন-যাপনের বিজ্ঞান। আকর্ষণীয় কথার ফুলঝুরিতে ভুলে টাকাওয়ালা সাধারণ শিক্ষিত মানুষেরা এদের প্রতারণার ফাঁদে নিজেদেরকে সঁপে দিচ্ছেন অবলীলাক্রমে। ব্যয় করছেন কথিত ধ্যানের পিছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ঢেলে দিচ্ছেন হাযার হাযার টাকা। অথচ একটা রঙিন স্বপ্ন ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জুটছে না। অন্যদিকে মুসলমান যারা এদের দলে ভিড়ছে, তারা শিরকের মহাপাতকে লিপ্ত হয়ে দুনিয়া ও আখেরাত দু’টিই হারাচ্ছে। নিম্নে আমরা এদের আক্বীদা-বিশ্বাস ও কর্মনীতি যাচাই করব।- কোয়ান্টামের পঞ্চসূত্র হ’ল, প্রশান্তি, সুস্বাস্থ্য, প্রাচুর্য, সুখী পরিবার ও ধ্যান। বলা হয়েছে, কোয়ান্টাম প্রত্যেকের ধর্মবিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করে। সুখী মানুষের সবটুকু প্রয়োজন পূরণের প্রক্রিয়াই রয়েছে কোয়ান্টামে। তাই কোয়ান্টামই হচ্ছে নতুন সহস্রাব্দে আধুনিক মানুষের জীবন যাপনের বিজ্ঞান’। অন্যান্য ডিগ্রীর ন্যায় এখানকার ধ্যান সাধনায় যারা উত্তীর্ণ হয়, তাদেরকে ‘কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট’ বলে শ্রুতিমধুর একটা ডিগ্রী দেওয়া হয়। তাদের প্রচার অনুযায়ী বাংলাদেশে ফলিত মনোবিজ্ঞানের পথিকৃৎ এবং আত্মউন্নয়নে ধ্যান পদ্ধতির প্রবর্তক প্রফেসর এম.ইউ. আহমাদ নাকি ক্লিনিক্যালি ডেড হওয়ার পরেও পুনরায় জীবন লাভ করেন শুধু ‘তাঁকে বাঁচতে হবে, তিনি ছাড়া দেশে নির্ভরযোগ্য মনোচিকিৎসক নেই’ তাঁর এই দৃঢ় বিশ্বাসের জোরে’ (মহাজাতক, কোয়ান্টাম টেক্সট বুক, জানু. ২০০০, পৃঃ ২২-২৪)। অর্থাৎ হায়াত-মউতের মালিক তিনি নিজেই। প্রথমে বলে রাখি, মানবরচিত প্রত্যেক ধর্মেই স্ব স্ব নিয়মে ধ্যান পদ্ধতি আছে। হিন্দু-বৌদ্ধ যোগী-সন্ন্যাসীদের সাধন-ভজন সম্বন্ধে আমরা কিছুটা জানি। আল্লাহ প্রেরিত ঈসায়ী ধর্মে সর্বপ্রথম সন্ন্যাসবাদের উদ্ভব হয়। যে বিষয়ে আল্লাহ বলেন, ‘আর সন্ন্যাসবাদ, সেটাতো তারা নিজেরাই প্রবর্তন করেছিল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। আমরা তাদেরকে এ বিধান দেই নি। অথচ এটাও তারা যথাযথভাবে পালন করে নি। তাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছিল, তাদেরকে আমরা পুরস্কার দিয়েছিলাম। আর তাদের অধিকাংশ ছিল পাপাচারী’ (হাদীদ ৫৭/২৭)। এখানে আল্লাহ তাদেরকে দুইভাবে নিন্দা করেছেন। ১. তারা আল্লাহর দ্বীনের মধ্যে বিদ‘আত অর্থাৎ নতুন রীতির উদ্ভাবন করেছিল। ২. তারা নিজেরা যেটাকে আল্লাহর নৈকট্য মনে করে আবিষ্কার করেছিল, সেটার উপরেও তারা টিকে থাকতে পারেনি। ইসলামের স্বর্ণযুগের পরে ভ্রষ্টতার যুগে মা‘রেফতের নামে বিদ‘আতী পীর-ফকীররা নানাবিধ ধ্যান পদ্ধতি আবিষ্কার করে। অতঃপর কথিত ইশক্বের উচ্চ মার্গে পৌঁছে হুয়া হু করতে করতে যখন চক্ষু ছানাবড়া হয়ে ‘কাশফ’ বা ‘হাল’ হয়, তখন নাকি তাদের আত্মা পরমাত্মার মধ্যে লীন হয়ে যায়। একে তাদের পরিভাষায় ফানা ফিল্লাহ বা বাক্বা বিল্লাহ বলে। এরাই ছূফী ও পীর-মাশায়েখ নামে এদেশে পরিচিত। অথচ এইসব মা‘রেফতী তরীকার কোন অনুমোদন ইসলামে নেই। ধ্যানকে কোয়ান্টামের পরিভাষায় বলা হয় ‘মেডিটেশন’ (Medetation)। যার প্রথম ধাপ হ’ল ‘শিথিলায়ন’ যা মনের মধ্যে ধ্যানাবস্থা সৃষ্টি করে। আর শেষ ধাপ হ’ল মহা চৈতন্য (Super Consciousness)। যখন তারা বস্ত্তগত সীমা অতিক্রম করে মহা প্রশান্তির মধ্যে লীন হয়ে যায়। যদিও এর কোন সংজ্ঞা তাদের বইতে সুস্পষ্টভাবে নেই। এক্ষণে কোয়ান্টামের সাথে অন্যদের পার্থক্য এই যে, অন্যেরা স্ব স্ব ধর্মের মধ্যে বিদ‘আত সৃষ্টি করেছে ও স্ব স্ব ধর্মের নামেই পরিচিতি পেয়েছে। পক্ষান্তরে কোয়ান্টাম মেথড সকল ধর্ম ও বর্ণের লোকদের নতুন ধ্যানরীতিতে জমা করেছে। খানিকটা সম্রাট আকবরের দ্বীনে এলাহীর মত। তখন আবুল ফযল ও ফৈযীর মত সেকালের সেরা পণ্ডিতবর্গের মাধ্যমে সেটা চালু হয়েছিল মূলতঃ রাজনৈতিক কারণে। আর এ যুগে কিছু উচ্চ শিক্ষিত সুচতুর লোকদের মাধ্যমে এটা চালু হয়েছে ইসলাম থেকে মানুষকে সরিয়ে নেবার জন্যে এবং শিক্ষিত শ্রেণীকে বিশ্বাসে ও কর্মে পুরোপুরি ধর্মনিরপেক্ষ বানাবার জন্যে। যাতে ভবিষ্যতে এদেশ তার ইসলামী পরিচিতি হারিয়ে সেক্যুলার দেশে পরিণত হয়। মুনি-ঋষিরা ধ্যান করে তাদের ঈশ্বরের নৈকট্য লাভের জন্য। পক্ষান্তরে কোয়ান্টামে ধ্যান করা হয় স্ব স্ব ‘অন্তর্গুরু’কে পাওয়ার জন্য। যেমন বলা হচ্ছে, ‘অন্তর্গুরুকে পাওয়ার আকাংখা যত তীব্র হবে, তত সহজে আপনি তার দর্শন লাভ করবেন। এ ব্যাপারে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা হয়েছে কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েটদের’ (পূর্বোক্ত, পৃঃ ২৪৭)। যেমন একটি ঘটনা বলা হয়েছে, ‘ছেলে কোলকাতায় গিয়েছে। দু’দিন কোন খবর নেই। বাবা কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট। মাগরিবের নামাজ পড়ে মেডিটেশন কমান্ড সেন্টারে গিয়ে ছেলের বর্তমান অবস্থা দেখার চেষ্টা করতেই কোলকাতার একটি সিনেমা হলের গেট ভেসে এল। ছেলে সিনেমা হলের গেটে ঢুকছে। বাবা ছেলেকে তার উদ্বেগের কথা জানালেন। বললেন শিগগীর ফোন করতে’ (পূর্বোক্ত, পৃঃ ২৪১)।এমনিতরো উদ্ভট বহু গল্প তারা প্রচার করেছেন। এক্ষণে আমরা দেখব ইসলামের সাথে এর সম্পর্ক :- ১. এটি তাওহীদ বিশ্বাসের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক এবং পরিষ্কারভাবে শিরক। তাওহীদ বিশ্বাস সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ কেন্দ্রিক। ইসলামের সকল ইবাদতের লক্ষ্য হ’ল আল্লাহর দাসত্ব ও রাসূল (ছাঃ)-এর আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা ও পরকালে মুক্তি লাভ করা। পক্ষান্তরে কোয়ান্টামের ধ্যান সাধনার লক্ষ্য হ’ল অন্তর্গুরুকে পাওয়া। যা আল্লাহ থেকে সরিয়ে মানুষকে তার প্রবৃত্তির দাসত্বে আবদ্ধ করে। এদেরকে লক্ষ্য করেই আল্লাহ বলেন, ‘আপনি কি দেখেছেন ঐ ব্যক্তিকে, যে তার প্রবৃত্তিকে ইলাহ বানিয়েছে? আপনি কি তার যিম্মাদার হবেন’? ‘আপনি কি ভেবেছেন ওদের অধিকাংশ শুনে বা বুঝে? ওরা তো পশুর মত বা তার চাইতে পথভ্রষ্ট’ (ফুরক্বান ২৫/৪৩-৪৪)। মূলতঃ ঐ অন্তর্গুরুটা হ’ল শয়তান। সে সর্বদা তাকে রঙিন স্বপ্নের মাধ্যমে তার দিকে প্রলুব্ধ করে। ২. তারা বলেন, মনকে প্রশান্ত করার মতো নামাজ যাতে আপনি পড়তে পারেন সেজন্যই মেডিটেশন দরকার। কেননা নামাজের জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হুযুরিল ক্বালব, একাগ্রচিত্ততা। এটা কিভাবে অর্জিত হয়, তা এখানে এলে শেখা যায়’ (প্রশ্নোত্তর ১৪২৭)। জবাব : এটার জন্য সর্বোত্তম পন্থা হ’ল ছালাত। এর বাইরে কোন কিছুর অনুমোদন ইসলামে নেই। আল্লাহ বলেন, তুমি ছালাত কায়েম কর আমাকে স্মরণ করার জন্য’ (ত্বোয়াহা ১৪)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন সংকটে পড়তেন তখন ছালাতে রত হ’তেন (আবুদাঊদ হা/১৩১৯)। তিনি বলেছেন, তোমরা ছালাত আদায় কর, যেভাবে আমাকে দেখছ’ (বুখারী হা/৬৩১)। যারা খুশু-খুযুর সাথে ফরয, নফল ও তাহাজ্জুদ ছালাত নিয়মিতভাবে আদায় করে, তাদেরকেই আল্লাহ সফলকাম মুমিন বলেছেন (মুমিনূন ১-২)। আর ছালাতে ধ্যান করা হয় না। বরং একমনে বান্দা তার সৃষ্টিকর্তার সাথে একান্তে আলাপ করে (বুখারী হা/৫৩১)। সর্বোচ্চ শক্তির কাছে নিজের দুর্বলতা ও নিজের কামনা-বাসনা পেশ করে সে হৃদয়ে সর্বোচ্চ প্রশান্তি লাভ করে এবং নিশ্চিত আশাবাদী হয়। অথচ মেডিটেশনের কথিত অন্তর্গুরুর কোন ক্ষমতা নেই। তার সাধনায় নিশ্চিত আশাবাদের কোন প্রশ্নই ওঠে না। কেননা ওটা তো স্রেফ কল্পনা মাত্র। ছালাতে আল্লাহর ইবাদত করা হয়। পক্ষান্তরে মেডিটেশনে অন্তর্গুরুর ইবাদত করা হয়। একটি তাওহীদ, অপরটি শিরক। দু’টিকে এক বলা দিন ও রাতকে এক বলার সমান। যা চরম ধৃষ্টতার নামান্তর। ৩. তারা বলেন, কোয়ান্টাম মেডিটেশনের জন্য ধর্ম বিশ্বাস কোন যরূরী বিষয় নয়। ইসলাম বা অন্য কোনো ধর্মের সাথে এর কোন বিরোধ নেই। তাদের কার্যাবলীতে এর প্রমাণ রয়েছে। যেমন, ‘এখন কোয়ান্টাম শিশু কাননে রয়েছে ১৫টি জাতিগোষ্ঠীর চার শতাধিক শিশু। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, ক্রামা, খ্রিষ্টান, প্রকৃতিপূজারী সকল ধর্মের শিশুরাই যার যার ধর্ম পালন করছে। আর এক সাথে গড়ে উঠছে আলোকিত মানুষ হিসাবে’ (শিশু কানন)। জবাব : মানুষকে সকল ধর্ম থেকে বের করে এনে কোয়ান্টামের নতুন ধর্মে দীক্ষা নেবার ও কোয়ান্টাম নেতাদের গোলাম বানানোর চমৎকার যুক্তি এগুলি। কেননা অন্তর্গুরুর ব্যাখ্যায় তারা বলেছেন, আধ্যাত্মিকতার পথে অগ্রসর হতে গেলে একজন আলোকিত গুরুর কাছে বায়াত বা দীক্ষা নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া আধ্যাত্মিকতার সাধনা এক পিচ্ছিল পথ। যেকোন সময়ই পা পিছলে পাহাড় থেকে একেবারে গিরিখাদে পড়ে যেতে পারেন’ (টেক্সটবুক, পৃঃ ২৪৭)। অর্থাৎ এরা ‘আলোকিত মানুষ’ বানাচ্ছে না। বরং ইসলামের আলো থেকে বের করে এক অজানা অন্ধকারে বন্দী করছে। যার পরিণাম জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নয়। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন তালাশ করবে, তা কবুল করা হবে না। ঐ ব্যক্তি আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আলে ইমরান ৮৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আমি তোমাদের কাছে একটি উজ্জ্বল ও পরিচ্ছন্ন দ্বীন নিয়ে এসেছি’ (আহমাদ, মিশকাত হা/১৭৭)।অতএব ইসলামের প্রকৃত অনুসারীরাই কেবল আলোকিত মানুষ। বাকী সবাই অন্ধকারের অধিবাসী। ৪. তারা বলেন, বহু আলেম আমাদের মেডিটেশন কোর্সে অংশগ্রহণ করেন এবং তারা এর সাথে ইসলামের কোন বিরোধ নেই বলেছেন। জবাব : অল্প জ্ঞানী অথবা কপট বিশ্বাসী ও দুনিয়াপূজারী লোকেরাই চিরকাল ইসলামের ক্ষতি করেছে। আজও করছে। ওমর (রাঃ) বলেন, ইসলামকে ধ্বংস করে তিনটি বস্ত্ত : (১) আলেমদের পদস্খলন (২) আল্লাহর কিতাবে মুনাফিকদের ঝগড়া এবং (৩) পথভ্রষ্ট নেতাদের শাসন’ (দারেমী)। মনে রাখা আবশ্যক যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জীবদ্দশায় ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে। অতএব যা তাঁর ও তাঁর ছাহাবীগণের আমলে দ্বীন হিসাবে গৃহীত ছিল, কেবলমাত্র সেটাই দ্বীন হিসাবে গৃহীত হবে। তার বাইরে কোন কিছুই দ্বীন নয়। ৫. মেডিটেশন পদ্ধতি নিজের উপরে তাওয়াক্কুল করতে বলে এবং শিখানো হয় যে, ‘তুমি চাইলেই সব করতে পার’। এরা হাতে মূল্যবান ‘কোয়ান্টাম বালা’ পরে ও তার উপরে ভরসা করে। জবাব : ইসলাম মানুষকে মহাশক্তিধর আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করতে শিখায় এবং আল্লাহ যা চান তাই হয়। এর মাধ্যমে মুমিন নিশ্চিন্ত জীবন লাভ করে ও পূর্ণ আত্মশক্তি ফিরে পায়। আর ইসলামে এ ধরনের ‘বালা’ পরা ও তাবীয ঝুলানো শিরক (ছহীহাহ হা/৪৯২)। ৬. তারা বলেন, শিথিলায়ন প্রক্রিয়ায় মানুষের মধ্যে এমন এক ক্ষমতা তৈরী হয়, যার দ্বারা সে নিজেই নিজের চাওয়া-পাওয়া পূরণ করতে পারে। এজন্য একটা গল্প বর্ণনা করা হয়েছে যে, এক ইঞ্জিনিয়ার সপরিবারে আমেরিকায় বসবাস করার মনছবি দেখতে লাগল। ফলে সে ডিভি ভিসা পেয়ে গেল। তারপর সেখানে ভাল একটা চাকুরীর জন্য মনছবি দেখতে লাগল। ফলে সেখানে যাওয়ার দেড় মাসের মধ্যেই উন্নতমানের একটা চাকুরী পেয়ে গেল’(টেক্সট বুক পৃঃ ১১৫)। জবাব : ইসলাম মানুষকে তাকদীরে বিশ্বাস রেখে বৈধভাবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে বলে। অথচ কোয়ান্টাম সেখানে আল্লাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে কথিত মনছবির পূজা করতে বলে। ৭. কোয়ান্টামের মতে রোগের মূল কারণ হ’ল মানসিক। তাই সেখানে মনছবি বা ইমেজ থেরাপি ছাড়াও ‘দেহের ভিতরে ভ্রমণ’ নামক পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরের নানা অঙ্গের মধ্য দিয়ে কাল্পনিক ভ্রমণ করতে বলা হয়। এতে সে তার সমস্যার স্বরূপ সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করে এবং নিজেই কম্যান্ড সেন্টারের মাধ্যমে সমাধান করতে পারে। যেমন, একজন ক্যান্সার রোগী তার ক্যান্সারের কোষগুলিকে সরিষার দানা রূপে কল্পনা করে। আর দেখে যে অসংখ্য ছোট ছোট পাখি ঐ সরিষাদানাগুলো খেয়ে নিচ্ছে। এভাবে আস্তে আস্তে সর্ষে দানাও শেষ, তার ক্যান্সারও শেষ’ (টেক্সট বুক পৃঃ ১৯৪)। ৮. এদের শোষণের একটি হাতিয়ার হ’ল ‘মাটির ব্যাংক’। যে নিয়তে এখানে টাকা রাখবেন, সে নিয়ত পূরণ হবে। প্রথমবারে পূরণ না হ’লে বুঝতে হবে মাটির ব্যাংক এখনো সন্তুষ্ট হয়নি। এভাবে টাকা ফেলতেই থাকবেন। কোন মানত করলে মাটির ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হবে। পূরণ না হলে অর্থের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এখানে খাঁটি সোনার চেইন বা হীরার আংটি দিতে পারেন। ইমিটেশন দিলে মানত পূরণ হবে না (প্রশ্নোত্তর)। এর জন্য একটা গল্প ফাঁদা হয়েছে। যেমন, ‘মধ্যরাতে উঠে মাটির ব্যাংকে পাঁচশত টাকা রাখার সাথে সাথে মুমূর্ষু ছেলে সুস্থ হয়ে গেল’ (দুঃসময়ের বন্ধু..)। প্রিয় পাঠক! বুঝতে পারছেন, কত সুচতুরভাবে মানুষকে আল্লাহ থেকে সরিয়ে নিয়ে তাদের কম্যান্ড সেন্টারে আবদ্ধ করা হচ্ছে এবং সেই সাথে মাটির ব্যাংকে টাকা ও গহনা রাখার ও তা কুড়িয়ে নেবার চমৎকার ফাঁদ পাতা হয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে রোগ ও তা আরোগ্য দানের মালিক আল্লাহ। আল্লাহর হুকুম আছে বলেই মুমিন ঔষধ খায়। ঔষধ আরোগ্যদাতা নয়। বরং আল্লাহ মূল আরোগ্যদাতা। এই বিশ্বাস তাকে প্রবল মানসিক শক্তিতে শক্তিমান করে তোলে। এজন্য তাকে মেডিটেশন বা কম্যান্ড সেন্টারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মাটির ব্যাংকে টাকা রাখারও দরকার হয় না। বরং গরীবকে ছাদাক্বা দিলে তার গোনাহ মাফ হয় (মিশকাত হা/২৯)। ৯. অন্যান্য বিদ‘আতীদের ন্যায় এরাও কুরআন-হাদীছের অপব্যাখ্যা করেছে মুসলমানদের ধোঁকা দিয়ে দলে ভিড়ানোর জন্য। যেমন- (ক) ‘সকল ধর্মই সত্য’ তাদের এই মতবাদের পক্ষে সূরা কাফেরূনের ‘লাকুম দ্বীনুকুম ওয়া লিয়া দ্বীন’ শেষ আয়াতটি ব্যবহার করেছে। যেন আবু জাহলের দ্বীনও ঠিক, মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর দ্বীনও ঠিক। এই অপব্যাখ্যা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকরা ও তাদের পদলেহীরা করে থাকে। কোয়ান্টামের লোকেরাও করছে। অথচ ইসলামের সারকথা একটি বাক্যেই বলা হয়েছে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই। একথার মধ্যে সকল ধর্ম ও মতাদর্শকে অস্বীকার করা হয়েছে। কোয়ান্টামের অন্তর্গুরু নামক ইলাহটিকেও বাতিল করা হয়েছে। (খ) তারা বলেন মেডিটেশন একটি ইবাদাত। যা রাসূল (ছাঃ) হেরা গুহায় করেছেন’। অথচ এটি স্রেফ তোহমত বৈ কিছু নয়। নিঃসঙ্গপ্রিয়তা আর মেডিটেশন এক নয়। তাছাড়া নবী হওয়ার পরে তিনি কখনো হেরা গুহায় যাননি। ছাহাবায়ে কেরামও কখনো এটি করেননি। (গ) তারা সূরা জিন-এর ২৬ ও ২৭ আয়াতের অপব্যাখ্যা করে বলেছেন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা গায়েবের খবর জানাতে পারেন। অতএব যে যা জানতে চায় আল্লাহ তাকে সেই জ্ঞান দিয়ে দেন’ (প্রশ্নোত্তর ১৭৫৩)। অথচ উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাঁর মনোনীত রাসূল ছাড়া তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারু নিকট প্রকাশ করেন না। এ সময় তিনি সামনে ও পিছনে প্রহরী নিযুক্ত করেন’। অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর রাসূলের নিকট ‘অহি’ প্রেরণ করেন এবং তাকে শয়তান থেকে নিরাপদ রাখেন। এই ‘অহি’-টাই হ’ল গায়েবের খবর, যা কুরআন ও হাদীছ আকারে আমাদের কাছে মওজুদ রয়েছে। রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পর ‘অহি’-র আগমন বন্ধ হয়ে গেছে। অতএব কোয়ান্টামের গুরুরা চাইলেও গায়েবের খবর জানতে পারবেন না। (ঘ) তারা সূরা বুরূজ-এর বুরূজ অর্থ করেন ‘রাশিচক্র’। যাতে আল্লাহকে বাদ দিয়ে রাশিচক্র অনুযায়ী মানুষের ভাল-মন্দ ও শুভাশুভ নির্ধারণের বিষয়টি তাদের শিষ্যদের মনে গেঁথে যায়। অথচ এটি হিন্দু ও তারকা পূজারীদের শিরকী আক্বীদা মাত্র। (ঙ) তারা সূরা আলে ইমরানের ১৯১ আয়াতটি তাদের আবিষ্কৃত মেডিটেশনের পক্ষে প্রমাণ হিসাবে দাঁড় করিয়েছেন (প্রশ্নোত্তর ১৭৫৩)।ঐ সাথে একটি জাল হাদীছকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছেন যে, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, সৃষ্টি সম্পর্কে এক ঘণ্টার ধ্যান ৭০ বছরের নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম’ (প্রশ্নোত্তর ১৭২৪)।অথচ উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর সৃষ্টি বিষয়ে গভীর গবেষণা তাকে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনায় উদ্বুদ্ধ করে’। কোয়ান্টামের কথিত অন্তর্গুরুর কাছে যেতে বলে না। আর হাদীছটি হ’ল জাল। যা আদৌ রাসূল (ছাঃ)-এর বাণী নয়। কোন কোন বর্ণনায় ৬০ বছর ও ১০০০ বছর বলা হয়েছে’ (সিলসিলা যঈফাহ হা/১৭১)। পরিশেষে বলব, কোয়ান্টাম মেথডের পূরা চিন্তাধারাটাই হ’ল তাওহীদ বিরোধী এবং শিরক প্রসূত। যা মানুষের মাথা থেকে বেরিয়ে এলেও এর মূল উদ্গাতা হ’ল শয়তান। মানুষকে জাহান্নামে নেবার জন্য মানুষের নিকট বিভিন্ন পাপকর্ম শোভনীয় করে পেশ করার ক্ষমতা আল্লাহ তাকে দিয়েছেন (হিজর ৩৯)। তবে সে আল্লাহর কোন মুখলেছ বান্দাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না (হিজর ৪০)। শয়তান নিজে অথবা কোন মানুষের মাধ্যমে প্রতারণা করে থাকে। যেমন হঠাৎ করে শোনা যায়, অমুক স্থানে অমুকের স্বপ্নে পাওয়া শিকড়ে বা তাবীযে মানুষের সব রোগ ভাল হয়ে যাচ্ছে। ফলে দু’পাঁচ মাস যাবত দৈনিক লাখো মানুষের ভিড় জমিয়ে হাযারো মুসলমানের ঈমান হরণ করে হঠাৎ একদিন ঐ অলৌকিক চিকিৎসক উধাও হয়ে যায়। এদের এই ধোঁকার জালে আবদ্ধ হয়েছিল সর্বপ্রথম নূহ (আঃ)-এর কওম। যারা পরে আল্লাহর গযবে ধ্বংস হয়ে যায়। আমরাও যদি শিরকের মহাপাপ থেকে দ্রুত তওবা না করি, তাহ’লে আমরাও তাঁর গযবে ধ্বংস হয়ে যাব। অতএব হে মানুষ! সাবধান হও!!(স.স.)

অনেক দিন

অনেক দিন আর নিরব রাতের একাকী অস্থিরতার পর প্রশান্তির জন্য আল্লাহ্‌ তালাহ জীবনে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হিসেবে স্ত্রী দান করেন কিন্তু আমার কাছে তাদের খুব অদ্ভুদ মনে হয় যারা বিয়ে করে বউয়ের ছবি ইন্টারনেটে পোষ্ট করে দেয়।যেন এটা নিজের বউকে সকলের মাঝে বণ্টন করার মত কিন্তু বড়''আফসো্রের বিষয়; যদি তারা এই গুনাহের সাজার ব্যাপারে শক্তিধর আল্লাহ্‌কে ভয় করার কথা ভাবতো !ইচ্ছে করলেই হয়তো কেও বিয়ে করতে পারে না কিন্তু আপনি পারলেন এই জন্য আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় না করে সকলের মাঝে নিজের পবিত্র স্ত্রীর ফটো বণ্টন অমার্জনীয় অপরাধ । এটা আবু জাহেলও করে নি ,মুসলমান করে কি করে?? আপনার বউ শুধু আপনার জন্য মনের মত করে সেজেছে সে হয়তো জানেও না যাকে বিশ্বাস করে বউ হয়ে এসেছে সে জালিম তাকে আজ বাজারে তুলে দিয়েছে হয়তো তাকে কেও কোনদিন দেখেও নি।।ভাইয়া নিজের বউয়ের লজ্জা অনেক দামি'হাঁ'অনেক দামি তার লজ্জার মধ্যে আপনার সুখ,বরকত এবং রহমত তাই তাকে এই ভাবে ফেইসবুকের গোনাহের বাজারে না উঠালে কি নয় ? বউ তো একান্ত আদরের আপনার ভাললাগার জিনিস এটা বণ্টনের জিনিস নয় ।আশা করি আমাদের সচেতন মুসলিম ভাইয়েরা এ বিষয়ে আল্লাহ্‌কে ভয় করে এসব থেকে নিজেও বিরত থাকবে এবং অন্যদের বাঁধা দিয়ে ঈমানী দায়িত্ব পালন করবে ইনশাল্লাহ ............।

তাওয়াক্কুলের একটা ঘটনা

তাওয়াক্কুলের একটা ঘটনা কথিত আছে যে জনৈক দরবেশ কোন এক মসজিদে এ'তেকাফের নিয়াতে বসিয়া পড়িল।কিন্ত তাহার খাওয়ার কোন ব্যবস্হা ছিল না।মসজিদের ইমাম সাহেব উপদেশ দিলেন যে,অসহায় অবস্হায় মসজিদে পড়িয়া থাকার চেয়ে কোন কাজ কর্ম করিয়া খাওয়া উত্তম কারণ পেট পালা ফরজ।দরবেশ চুপ করিয়া রহিলেন।ইমাম সাহেব তাহাকে আবার উক্ত কথা বলিলেন কিন্ত দরবেশ ইহাতে চুপ রহিলেন,ইমাম যখন তৃতীয় বারের পর চতুর্থ বার তাঁহাকে এই রুপ নচিহত করিলেন তখন দরবেশ মুখ খুলিয়া বলিল যে,মসজাদের পাশে ইহুদী দোকানদার আমাকে দৈনিক দুইটা করিয়া রুটি পৌছাইবার ওয়াদা করিয়াছে।ইমাম সাহেব বলিলেন তবে আপনি এ'তেকাফ করিতে পারেন।এইবার দরবেশ বলিলেন আফছোছ আপনার মত লোক ইমাম না হওয়া উচিত ছিল।এইরুপ অসম্পূর্ণ তওহীদ লইয়া বান্দা ও আল্লাহর মধ্যে কি করিয়া মধ্যস্হতা করেন।একজন কাফের ইহুদীর ওয়াদা আপনার নিকট আল্লাহ্ পাকের রিজিক পৌঁছানোর ওয়াদার চেয়ে অধিক বিশ্বাসযোগ্য হইয়া গেল।আফছোছ আপনার অবস্হার উপর। বাস্তবিকই দরবেশ ছাহেব সত্য বলিয়াছেন বান্দার ওয়াদার উপর তো আমাদের বাশ্বাস হয় কিন্ত আল্লাহ্ পাকের ওয়াদার উপর হয় না।

-:বিবাহ সম্পর্কে একটা পোষ্ট:-

-:বিবাহ সম্পর্কে একটা পোষ্ট:- ওলামাগণ লিখিয়াছেন অপেক্ষাকৃত গরিবের মেয়ে বিবাহ করিবে। কেননা বড় লোকের মেয়ে বিবাহ করিলে পাঁচ প্রকার মচীবতে পরিতে হয়। (১)মোহর বেশী দিতে হয়। (২)প্রস্ততির টাল বাহানায়(অর্থাত্‍ বিবির সহিত সাক্ষাত্‍)রুকছতি বিলম্বে হয়। (৩)বিবির দ্বারা খেদমত নেওয়া মুশকিল হইয়া পড়ে। (৪)সে খরচ পত্র বেশী করিতে চাহিবে। (৫)তালাক দিতে চাহিলেও মালের লোভে তালাক দেওয়া মুশকিল হইয়া পড়িবে।

-:মোনাফেক সর্ম্পকে একটা পোষ্ট:-

-:মোনাফেক সর্ম্পকে একটা পোষ্ট:- ক্বেয়ামাতের দিন মোনাফেক নারী পুরুষ সকলেই মোমেনদিগকে বলিবে তোমরা আমাদের জন্য একটু অপেক্ষা কর যেন আমরাও তোমাদের নূর হইতে কিছু আলো পাইতে পারি।তখন তাহাদিগকে উত্তর দেওয়া হইবে তোমরা পিছনে হটিয়া আলো তালাশ কর।অতঃপর উভয়ের মধ্য ভাগে একটা প্রাচীর খাড়া হইয়া যাইবে যাহার মধ্যে একটি দরজা থাকিবে যাহার ভিতর দিকে রহমত হইবে ও বাহির দিকে আজাব হইবে।তখন মোনাফেক্বগণ চিত্‍কার করিয়া বলিবে আমরা কি দুনিয়াতে তোমাদের সাথে ছিলাম না? তখন মুসলমানগণ বলিবেন,হ্যাঁ ছিলে সত্যই;তবে তোমরা নিজদিগকে ভুল পথে চালিত করিয়াছিলে ও মুসলমানদের উপর বিপদ আসুক এর অপেক্ষায় থাকিতে আর ইসলামের ব্যপারে সন্দেহ পোষণ করিতে।এবং বেহুদা আশা আকাঙ্খাগুলি তোমাদিগকে ধোকায় ফেলিয়া রাখিয়াছিল।এমন কি মউতের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত ধোকাবাজ শয়তান আল্লাহর ব্যাপারে তোমাদিগকে ধোকায় ফেলিয়া রাখিয়াছিল।

-:তাওয়াক্কুলের একটা ঘটনা:

-:তাওয়াক্কুলের একটা ঘটনা:- জনৈক বুজুর্গ বলেন,আমি এবং আমার একজন সাথী কোন এক পাহাড়ে এবাদাতে লিপ্ত ছিলাম। সাথী ঘাস পাতা খাইয়া দিন কাটাইতেন আর আমার জন্য আল্লাহ পাক এই ব্যবস্হা করিলেন যে,প্রতিদিন একটি হরিনী আমার সামনে আসিয়া দাঁড়াইত আমি তাহার স্তন হইতে দুধ পান করিতাম।তারপর সে চলিয়া যাইত।আমার সাথী আমার নিকট হইতে দূরে অবস্হান করিত।একদিন সে আমার নিকট আসিয়া বলিল,ভাই নিকটেই একটা কাফেলা আগমন করিয়াছে চলুন আমরা তাহাদের কাছে গিয়া দেখি দুধ বা কোন খাবার পাওয়া যায় কিনা?আমি প্রথমে সম্পর্ণ নারাজ ছিলাম কিন্ত সাথীর বারংবার অনুরধে অবশেষে কাফেলার নিকট গেলাম।তাহারা আমাদিগকে পানাহার করাইল।আমরা নিজ নিজ স্হানে ফিরিয়া আসিলাম কিন্ত তারপর থেকে হরিণীর আসা বন্ধ হইয়া গেল।আমিও বুঝতে পারিলাম যে,গায়রুল্লাহর নিকট ধর্ণা দেওয়ার পাপে যাহার জন্য কোন চিন্তা করিতে হইত না হরিনীর আগমন বন্ধ হইয়া গিয়াছে। ছাহেবে রওজ(রাঃ)বলেন,ইহাতে গোনাহের তিনটি বস্ত ছিল বলিয়া মনে হয়। ১)এখতিয়ার করা তাওয়াক্কুলকে ছাড়িয়া দিল। ২) অন্যের জিনিসের উপর লোভ। ৩)সম্ভবতঃকাফেলা ওয়ালাদের রিজিক পবিত্র ছিল না। তাই রিজিক হইতে বঞ্চিত হইয়া গেল। বিরাট উপদেশ মূলক ঘটনা,আমরা অনেক সময় লোভে পড়িয়া আল্লাহ প্রদত্ত মোবারক রুজী হইতে মাহরুম হইয়া যাই।

হযরত ওমায়ের(রাঃ)এর শাহাদাত

হযরত ওমায়ের(রাঃ)এর শাহাদাত বদরের যুদ্ধে নবীয়ে(ছঃ)একটি তাবুর মধ্যে থাকিয়া ছাহাবীদেরকে এরশাদ করিলেন,তোমরা উঠ এবং এমন এক জান্নাতের দিকে অগ্রসর হও যাহার প্রশস্ততা হইল আসমান ও জমিনের থেকে অধিক। এবং উহা পরহেজগারিদের জন্য নির্মিত করা হইয়াছে। হুজুর পাক(ছঃ)এর বাণী শুনিয়া ওমায়ের বিন হাম্মাম(রাঃ)বলিয়া উঠিলেন,বাহ বাহ। হুজুর পাক(ছঃ)কিসের উপর তুমি এই খুশির শব্দ বলিলে? উত্তরে তিনি বলেন তিনি বলেন হুজুর! আমার ইচ্ছা আমিও যেন সেই বেহেশবাসীদের মধ্যে হইতে পারি। হুজুর(ছঃ)বলিলেন,তুমিও তাহাদের মধ্যে এক জন। অতঃপর ওমায়ের থলি হইতে কয়েকটা খেজুর বাহির করিয়া খাইতে লাগিলেন।পরক্ষণেই বলিয়া উঠিলেন,এই খেজুর খাওয়া পরিমাণ জিন্দেগীতো বড় লম্বা মনে হইতেছে।আর কতক্ষণ অপেক্ষা করা যায়,এই বলিয়া খেজুরগুলা ফেলিয়া দিয়া তলোয়ার হাতে কাফিরদের ভিতর ঢুকিয়া পড়িলেন ও যুদ্ধ করিতে করিতে শহিদ হইয়া গেলেন। ঐসব লোকেরাই জান্নাত কি সেটা বুঝতে পারছিলেন ঠিক মত।তাই তাহার কাছে দুনিয়ার খেজুর খাওয়ার সময়টুকু বড় লম্বা জিন্দেগী মনে হইল।এবং সেগুলা না খেয়ে যুদ্ধে শরিক হন।

মানুষের সৌভাগ্যের ১১টি নিদর্শন

ফকীহ আবুল লাইস(রহঃ)বলেন, মানুষের সৌভাগ্যের ১১টি নিদর্শন রহিয়াছে এবং দুর্ভাগ্যেরও ১১টি নির্দশন রহিয়াছে। সৌভাগ্যের নির্দশন সমূহ হইতেছে ১)দুনিয়ার প্রতি নিরাশক্ততা আখেরাতের প্রতি আশক্তি। ২)ইবাদাত এবং কোরআন তেলাওয়াতের আধিক্য। ৩)বাহুল্য কথা পরিত্যাগ করা। ৪)সময়মত সুস্ঠু ভাবে নামাজ আদায় করা। ৫)অবৈধ জিনিষ যতই ক্ষুদ্র হোক তাহা হইতে আত্মরক্ষা করা। ৬)পূণ্যশীল ব্যক্তিদের সান্নাধ্য গ্রহণ। ৭)বিনয়ী থাকা অহংকার না করা। ৮)দানশীল এবং দয়ালু হওয়া। ৯)আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি ভালবাসা প্রদর্শন করা। ১০)সৃষ্টি জীব সমূহের কল্যাণ সাধন করা। ১১)মৃত্যুর কথা সর্বাধিক চিন্তা করা। দুর্ভাগ্যের নির্দশন সমূহ পরের পোষ্টে দিব। ইনশা আল্লাহ।

-:মূর্খ বন্ধুর থেকে শিক্ষিত শত্রু অনেক উত্তম:-

-:মূর্খ বন্ধুর থেকে শিক্ষিত শত্রু অনেক উত্তম:- এক লোকের একজন শিক্ষিত শত্রু এবং একজন মূর্খ বন্ধু ছিল। লোকটা সাথে সর্বক্ষণ তার বন্ধুটি থাকত। একদিন লোকটার ঘুম পেল। সে তার বন্ধুকে বলল,বন্ধু আমি ঘুমাব তুমি দেখবা কোন মাছি পড়লে মাছি তাড়াবে। বন্ধু বলল ঠিক আছে তুমি ঘুমাও আমি মাছি তাড়াব। লোকটা ঘুমিয়া পড়ল। কিছুক্ষণ পর একটা মাছি পড়ল। বন্ধু পাশে বসে সেটাকে মেরে ফেলল। এই রকম এক একটা পড়ে আর সে মেরে ফেলে। কিছুক্ষণ পর সে চিন্তা করল একটা একটা মারি তাতে অনেক কষ্ট হয়। এর থেকে অনেক গুলা মাছি এক সাথে পড়লে সবগুলাকে একটা পাথর মেরে মারা যাবে।এতে একসাথে অনেক মাছি মারা যাবে এবং কষ্ট কম লাগবে। যেই চিন্ত সেই কাজ।কিছুক্ষণের মধ্যে অনেক মাছি পড়ল।এবং সে বড় একটা পাথর মারল মাছি তো মরলোও সাথে লোকটাও মারা গেল। এই জন্য মূর্খ বন্ধু পরিত্যাগ করা উচিত। এবং শিক্ষিত মানুষের সংস্পর্শ থাকা দরকার।

মানুষ তিনটি জিনিসের পিছনে পড়লে ধ্বংস হয়ে যায়।

মানুষ তিনটি জিনিসের পিছনে পড়লে ধ্বংস হয়ে যায়। ১)টাকা। ২)নারী। ৩)সম্মান। আসুন আমরা নিজেকে পবিত্র রাখার জন্য এইটি জিনিস থেকে বেঁচে থাকি।

-:কোরআনের বাণী:-

-:কোরআনের বাণী:- হে মুসলমানগণ!যে পর্যন্ত তোমরা প্রিয়বস্তু হইতে আল্লাহর রাস্তায় দান না করিরে সে পর্যন্ত তোমরা কখনও পূর্ণ নেকী হাসিল করিতে পারিবে না। (সূরায় আল ইমরান)

প্রিয় বোনদেরকে বলছি!!!!!!!

প্রিয় বোনদেরকে বলছি!!!!!!! বোরকা পড়াটা যুগ যুগ ধরে এদেশের মেয়েদের কাছে পর্দা করার প্রধান মাধ্যম হিসেবে গন্য হয়ে আসছে । এদেশের নারীরা পর্দা করার জন্য বোরকা কেই বেশী প্রাধান্য দিয়ে থাকে । বোরকা পড়ার উদ্দেশ্যে হচ্ছে নারী শরীর টাকে পর পুরুষদের দৃষ্টি থেকে আড়াল করা বা ঢেকে রাখা । কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য , আজকাল নারীরা বোরকা পড়া টাকে পর্দা ক মাধ্যম বানানোর পরিবর্তে ফ্যাশন করার মাধ্যম বানিয়ে ফেলেছে । তারা এখন আর চিরাচরিত কালো রঙের বোরকা পড়তে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে না । তারা ভাবে কালো রঙের বোরকা পড়লে তাদেরকে আনস্মার্ট লাগবে । তাই তারা রঙ বেরঙের রঙ ঝলমলে বোরকা পড়ে । আর সেগুলো হয়ে থাকে অত্যান্ত পাতলা কাপড়ের । অনেক সময় সেগুলো এমন পাতলা কাপড়ের হয়ে থাকে যে তাতে তাদের বোরকার নিচের কাপড় পর্যন্ত দেখা যায় । বোরকার মধ্যে ইদানিং নতুন ফ্যাশন বের হয়েছে , ছেলেদের মোবাইল শার্টের মতো তাদের বোরকার দুই পাশ দিয়ে ফাড়া থাকে । মাঝে মাঝে ফাড়া এত বেশী থাকে যে এতে তাদের সেলোয়ার এবং পায়ের গোড়ালীও চোখে পড়ে । এখন কথা হচ্ছে বোরকা পড়ার প্রধান উদ্দেশ্যেই হচ্ছে যাতে নারী দেহটা পর পুরুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকে । কিন্তু এভাবে রঙ ঝলমলে পাতলা কাপড় দিয়ে বানানো বোরকা পড়লে কি পু দৃষ্টি থেকে আপনি নিরাপদ থাকবেন ? নাকি তাদের কে আপনার প্রতি আরো আকর্ষণ করলেন ? একবার ভেবে দেখেছেন কি ? আমাদের মা , নানী রাও তো কালো বোরকা পড়তেন , তাদের কে তো কেউ আনস্মার্ট বলেনি ! বরং তারা সকলের শ্রদ্ধার পাত্রী ছিলেন । সাধারণত কালো রঙের বোরকা পড়লে সেই নারী দেহ কোন পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে না । কারন কালো হচ্ছে একটা আকর্ষণ হীন রঙ । কালো রঙের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হয় না । আজকাল অনেক বোরকা পড়া মেয়েরাও ধর্ষন এবং ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছে । যার একমাত্র কারন হচ্ছে এই ফ্যাশনওয়ালা পাতলা কাপড়ের রঙ ঝলমলে বোরকা । বোনদেরকে বলছি , আপনারা আমার কথায় রাগ করবেন না । আপনারা একবার ভেবে দেখুন , যে বোরকা পড়লে আপনাদের দেহের প্রতি পর পুরুষদের দৃষ্টি আরো প্রবল ভাবে আকৃষ্ট হয় এমন বোরকা পড়ে আপনাদের লাভ কী ? বোরকা তো আপনি পড়ছেন পর পুরুষের দৃষ্টি থেকে দেহ টাকে বাচানোর জন্য । তাই বোনেরা আসুন আল্লাহকে সন্তুুষ্ট করার জন্যে হলেও এসব অনৈসলামিক কর্মকান্ড থেকে নিজেকে দূরে রাখি । আপনি কালো রঙ যদি পড়তে না চান তাহলে অন্তত এক কালারের বোরকা পড়ুন । পাতলা কাপড় বাদ দিয়ে একটু কস্ট হলেও মোটা কাপড়ের বোরকা পড়ুন , যাতে ভেতরের কাপড় দেখা না যায় । বোরকার জন্যে এমন এক রঙের কাপড় বেছে নিন যাতে পুরুষদের দৃস্টি আকৃস্ট না হয় । আল্লাহ আমার সকল বোনদের কে ইসলামী আকিদা মত চলার তৌফিক দান করুন । আমিন ।

এক নাস্তিক ছেলে

এক নাস্তিক ছেলে রিক্সা দিয়ে যাচ্ছে। রিক্সাওয়ালা কিছুক্ষণ পরপরই আল্লাহ আল্লাহ বলছে। নাস্তিকঃ চাচা, আল্লাহরে ডাইকা কি করবেন? আল্লাহ কি দুনিয়া চালায় নাকি? আপনি লেখাপড়া করেন নাই, তাই জানেন না। রিক্সাওয়ালাঃ বাবা আপনি কই যাইবেন? নাস্তিকঃ অফিসে যাব। রিক্সাওয়ালাঃ আচ্ছা। নাস্তিকঃ কি হল চাচা? আপনি রিক্সা চালাচ্ছেন না কেন? . . . . . . . . . . রিক্সাওয়ালাঃ আরে বেটা, তুই না লেখাপড়া জানস? তাইলে এইডা জানস না? দুনিয়া যদি এমনি-এমনি ঘুরতে পারে, তাইলে আমার রিক্সার প্যাডেলও এমনি- এমনি ঘুরবে। চুপ কইরা বইয়া থাক শিক্ষিতের বাচ্চা !!

হাশরের মাঠে

জীবনে কি পেয়েছি পাইনিকো প্রভূ সেই হিসাব মেলাবোনা আজ আমি শুধু জেনেছি তোমার পথে চলাই হলো আমার বড় কাজ করোনিতো নদী, ফুল, পাখি আমায় করেছ তোমার খালিফা কত না পাওয়া কষ্টের মাঝেও হাসি মুখে তবু ফেলি পা জানি এই কাজ পরাবে হাশরের মাঠে আমায় নূরের তাজ

আল্লাহ মহান হলো সব সুন্দরের সুন্দর

ফুল কাননের ফুলগুলো যদি এত সুন্দর গোলাপের পাপড়িগুলো যদি এত সুন্দর রক্ত জবার রক্ত রঙ যদি এত সুন্দর হাসনাহেনার ঘ্রাণ যদি হয় এত সুন্দর নারীর মুচকি হাসি যদি এত সুন্দর ছোট্ট শিশুর ফোকলা হাসি যদি এত সুন্দর সারা দুনিয়াটা যদি এত সুন্দর যিনি গো এমনি গড়েন তিনি কত সুন্দর যিনি গো এভাবে সৃজেন তিনি কত সুন্দর যার এই মায়া খেলা তিনি কত সুন্দর যার পরশে হল এসব তিনি কত সুন্দর আমাদের রব যিনি, তিনি কত সুন্দর আমাদের মালিক যিনি,তিনি কত সুন্দর আল্লাহ মহান হলো সব সুন্দরের সুন্দর...